অভিবাসী কর্মীদের অধিকার নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির গবেষণা

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির (বিএনডব্লিউএলএ) উদ্যোগে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘হেলভেটাস বাংলাদেশের’ কারিগরি সহযোগিতায় ও সুইজারল্যান্ড সরকারের অর্থায়নে ‘স্ট্রেনথ এন্ড ইনফরমেটিভ মাইগ্রেশন সিস্টেমস্ (সিমস্)’ প্রকল্পের আওতায় অভিবাসী কর্মীদের অধিকার বিষয়ে সম্প্রতি একটি গবেষণা সম্পন্ন হয়েছে। যেখানে অভিবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে তা সমাধানের কিছু প্রস্তাবনাও রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর)সিমস্ গবেষণা প্রতিবেদন সংক্রান্ত জেলা পর্যায়ে স্টেকহোল্ডারদের সাথে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে চট্রগ্রামস্থ হোটেল গোল্ডেন ইনে এক মতবিনিময় কর্মশালায় এই গবেষণার বিষয়বস্তুসহ বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

‘বিএনডব্লিউএলএ’ এর সদস্য ও প্রকল্পের প্রতিনিধি এ্যাডভোকেট ফেরদৌস নিগারের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। পরে অনুষ্ঠানে সিমস্ প্রকল্পে ‘বিএনডব্লিউএলএ’ এর প্রতিনিধি মো. হানিফ মাহমুদ সিমস্ প্রকল্পের আওতায় অভিবাসী কর্মীদের অধিকার বিষয়ে গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল উপস্থাপন করেন।উপস্থাপনায় তিনি অভিবাসী কর্মীদের বিদেশে ও দেশে বিভিন্ন সমস্যা, প্রতিকার ও ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে জটিলতাসমূহ এবং কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানের ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে প্রধান অতিথি জেলা লিগাল এইড কর্মকর্তা ও সিনিয়র সহকারী জজ রাজিয়া সুলতানা বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতিকে অনুষ্ঠানটি আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার অভিবাসী কর্মীদের অত্যান্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেন। নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিকট সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে হবে যাতে সবাই সচেতন হয়। এ ব্যাপারে সরকারি ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহকে একসাথে কাজ করতে হবে।

এতে বক্তারা বলেন, অভিবাসী কর্মীদের কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ হয়ে এবং প্রয়োজনীয় নিয়ম মেনে বিদেশে যাওয়া উচিত। যাতে করে তারা কেউ বিদেশে গিয়ে বিপদে না পড়েন। এই জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

তারা বলেন, অভিবাসী কর্মীদের প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সমস্যা সমাধানে বা প্রতিকার প্রাপ্তির জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস বা প্রমাণ সংরক্ষণের বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। অভিবাসন প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে ও রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

এছাড়া অনুষ্ঠানে বিদেশফেরত কয়েকজন অভিবাসী কর্মী তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময়কালে বলেন, বিএমইটি এর অধীনে সালিসের জন্য আলাদা দক্ষ ও প্রশিক্ষিত সেল থাকলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাঙ্খিত সেবা পাওয়া সম্ভব হতো।

‘বিএনডব্লিউএলএ’-এর চট্রগ্রাম বিভাগীয় প্রধান এ্যাডভোকেট দিল আফরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা লিগাল এইড কর্মকর্তা ও সিনিয়র সহকারী জজ রাজিয়া সুলতানা। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় কর্মসংস্থান ও জনশক্তি ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মাহেন্দ্র চাকমা,জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের উপ-পরিচালক জহিরুল আলম মজুমদার, বিকেটিটিসির অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাধবী বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রত্যাশি চট্টগ্রামে প্রকল্প ব্যবস্থাপক বশির আহমেদ মনি।

এতে চট্রগ্রাম জেলায় কর্মরত বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি, আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও বিদেশফেরত অভিবাসী কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।