পাহাড়ি জনপদ রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মুসল্লিরা। এ যেন কচ্ছপ গতিকেও হাড় মানিয়েছে এই নির্মাণ কাজ। কাজের ধীরগতি ও গাফিলতির ফলে মসজিদের কাজ এখনো অনেকাংশ অসমাপ্ত।
মুসুল্লিদের অভিযোগ, ২০১৯ সালের শুরুর দিকে মডেল মসজিদের কাজ আরম্ভ হয়ে এখনো চলমান। দু-একজন শ্রমিক দিয়ে লোক দেখানো কাজ করছে বলে ক্ষোভ স্থানীয়দের।
এদিকে মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পূর্বেই দরজার রং উঠে যাচ্ছে, জানালার অনেকগুলো গ্লাস বাতাসেই ভেঙে পড়ছে। ফলে নামাজ আদায়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। কেউ কেউ বলছেন, “আল্লাহর ঘর নির্মাণে এমন অবহেলা অমার্জনীয়। এখানে নামাজ পড়তে এসে মনে হয়, কখন জানালার কাঁচ ভেঙে পড়ে!”
সরজমিনে দেখা মিলে মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ অনেককটা এখনো অসম্পূর্ণ রয়েছে। মসজিদের মিম্বারের কাজ, বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ, রঙের কাজ, জানালার কাচের কাজ, মসজিদের উপর তলা ও নিচ তলার অনেকাংশে বাকি এবং লাগানো কাচগুলোর অনেক জায়গায় বাতাসে পড়ে ভেঙেছে, দরজার রঙ উঠেছে, বিভিন্ন জায়গায় জংকার জমেছে এবং নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কেউই সেখানে উপস্থিত নেই।
স্থানীয় মুসুল্লি মো. আজিজ জানান, “মসজিদের দেয়ালের অনেক জায়গায় ফাটল দেখা যাচ্ছে। জানালা, দরজার কাঁচ জোরে বাতাস আসলেই ভেঙ্গে যাচ্ছে।”
মো. নুরজামান বলেন, ২০১৯ সালে মডেল মসজিদের কাজ আরম্ভ হয়। এখন চলছে ২০২৫ সালের মাঝামাঝি। প্রায় ৭ বছর চলছে। এখনো ৮০ শতাংশ কাজ হয়েছে কিনা সন্দেহ। অথচ ৩ বছরের চুক্তিতে ঠিকাদার কাজ নিয়েছিল।
নানিয়ারচর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. রহমান বলেন, এভাবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ ফেলে রাখায় স্থানীয় মুসলিমদের মনে ক্ষোভের জন্ম নিয়েছে।
নানিয়ারচর বাজার কমিটির সম্পাদক মো. সানাউল্লাহ বলেন, বিগত সরকারের আমলে তাদের দোসরদের দ্বারা এই মডেল মসজিদর কাজ শুরু করা হয়। তবে যে পরিমাণ কাজ হওয়ার কথা তার চেয়ে নিম্নমানের কাজ পরিলক্ষিত হয়েছে।অবিলম্বে ঠিকাদারের লাইসেন্স বাতিল করা হোক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাজটি করছে ঠিকাদার মো. জাফর। তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শর্মি চাকমা মুঠোফোনে জানান, নানিয়ারচর মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজে ঠিকাদারকে বারবার বলা হলেও সে গাফিলতি করে কাজ ধীর গতিতে করায় আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে তার দরপত্র বাতিলের লক্ষ্যে নতুন দরপত্র করার জন্য যোগাযোগ করেছি।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।