অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিল, প্রত্যাহার রেলের ধর্মঘট

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা রেল চালকদের নিয়ে প্রজ্ঞাপন বাতিল করার কথা জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। এর ফলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন রানিং স্টাফরা।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে কমলাপুর রেলস্টেশনে রানিং স্টাফদের সঙ্গে আলোচনার পর এ তথ্য জানান মন্ত্রী।

রেলমন্ত্রী বলেন, আমরা রেলের রানিং স্টাফদের দাবির সঙ্গে একমত। তাদের দাবি আদায়ে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু গত ১০ এপ্রিল বেসমারিক কর্মচারীদের পেনশন ও আনুতোষিক হিসাবের ক্ষেত্রে মূল বেতনের সঙ্গে কোনো ভাতা যোগ করার সুযোগ নেই বিধায় রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মূল বেতনের সঙ্গে ‘রানিং ভাতা’ পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা প্রদানের প্রস্তাবে নির্দেশক্রমে পুনরায় অর্থ বিভাগের অসম্মতি জানিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের এমন ঘোষণায় রানিং স্টাফরা কর্মবিরতিতে গেছেন। এতে রেলে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে বিষয়টি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা এই অফিসিয়াল আদেশ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে ফের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আজ যাঁরা এ ধর্মঘট ডেকেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। আমরা চাই সুষ্ঠু সমাধান।’

রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন, রেলমন্ত্রী যেহেতু আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন। আমিও নিজ কর্মস্থলে ফিরে যাচ্ছি। আন্দোলনরত সবাই আপনারা আপনাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে যান।

এর আগে পুরোনো নিয়‌মে ভাতা ও পেনশন সু‌বিধা বহাল রাখার দা‌বি‌তে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ধর্মঘট পালন করে রানিং স্টাফরা। এতে বুধবার ভোর ৬টা থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় সারাদেশে অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়। এসময় রেলওয়ে স্টেশনে ভোর থেকে শত শত মানুষকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। হঠাৎ ট্রেন চলাচল বন্ধে বিপাকে সাধারণ মানুষ ও অফিসগামী যাত্রীরা।

ট্রেনচালক, সহকারী চালক, গার্ড ও টিটিরা ১৬০ বছর ধরে মাইলেজ সুবিধা পাচ্ছিলেন। অর্থাৎ দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বেসিকের হিসেবে বাড়তি অর্থ পেতেন। এ ছাড়া অবসরের পর বেসিকের সঙ্গে এর ৭৫ শতাংশ অর্থ যোগ করে অবসরকালীন অর্থের হিসাব হতো। গত বছরের ৩ নভেম্বর এসব সুবিধা বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এর পর থেকে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে আসছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি।

গত ৩০ জানুয়ারি রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা। তবে ১০ এপ্রিল অর্থ বিভাগের এক আদেশে, রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানের প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হয়। এরপর হঠাৎ আজ ভোর থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেন তারা।

এমএফ

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।