অর্ধ যুগেও শেষ হয়নি সেতু নির্মাণ, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

যাতায়াতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে প্রায় ৬ বছর আগে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার লংগদু সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঝর্ণাটিলা গ্রামে একটি সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ঝর্ণাটিলা গ্রামের সাথে লংগদু সদরের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম সেতুটি। তবে বছরের পর বছর পার হলেও শেষ হচ্ছেনা সেতুটির নির্মাণ কাজ। এতে করে চলাচলে সধারণ মানুষের ভোগান্তি কিছুতেই কমছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৭ সালে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কাপ্তাই হ্রদ বেষ্টিত ঝর্ণাটিলা গ্রামের সাথে লংগদু উপজেলা সদরের যোগাযোগের জন্য সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। সে বছরের এপ্রিলে রাঙামাটি আসনের বর্তমান সাংসদ দীপংকর তালুকদার এমপি আনুষ্ঠানিকভাবে সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ কাজের তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।

শনিবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটির ঝর্ণাটিলা অংশে ৫টি পিলারের কিছু অংশের কাজ করা হয়েছে। তবে লংগদু অংশে কোনো কাজ শুরু হয়নি। এই পথে চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা। তবে বর্ষায় কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়তে শুরু করায় কচুরিপানা এসে নৌকা চলাচলেও বাধা হয়ে দাড়িয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের যাতায়াতে দূর্ভোগ নেমে এসেছে।

খেয়াঘাটের মাঝি ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঝর্ণাটিলা গ্রামে চার শতাধিক পরিবারের বসবাস। প্রতিদিন শতাধিক শিক্ষার্থী লংগদুর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়ার জন্য এই পথে যাতায়াত করে। হ্রদে পানি বেড়ে গেলে নৌকা একমাত্র চলাচলের ভরসা। এছাড়াও এই গ্রামে উৎপাদিত ফসল ও শাক সবজি বাজারে নিতে হলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় চাষীদের। পাশাপাশি কেউ অসুস্থ হলেও রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে দাড়ায়।

স্থানীয়রা আরও বলেন, সরকার সারা দেশে অসংখ্য সেতু ও রাস্তার কাজ করেছে কিন্তু এই সামান্য একটা সেতুর কাজ করতে এতো সময় কেন লাগছে? এটা রহস্যজনক! আমরা স্থানীয় নেতৃবৃন্দকেও অনেকবার বলেছি সবাই শুধু আশ্বাস দিয়েছে কিন্তু কোনো ফলাফল দেখতে পাচ্ছি না।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য ফারুক আহাম্মেদ বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে ছয় বছরেও গুরুত্বপূর্ণ একটা সেতুর কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। সেতু নির্মাণে জেলা পরিষদ প্রতি অর্থ বছরে বরাদ্ধ দেয় কিন্তু সেতুর কাজে কোনো অগ্রগতি নাই। শুনেছি এ বছরেও কিছু টাকা বরাদ্দ দিয়েছে জেলা পরিষদ। এই বরাদ্দ একসাথে দেওয়া হলে ঠিকাদার কাজটিকে দ্রুত এগিয়ে নিতে পারতো।

লংগদু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিক্রম চাকমা বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেতুর বিষয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন এই অর্থ বছরে কিছু বরাদ্দ দিবেন। আশা করছি বরাদ্দ পেলে ঠিকাদার নির্মাণ কাজটি শুরু করতে পারবে। সেতুটি দ্রুত নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঝর্ণাটিলা এলাকাটি উপজেলা সদরের কাছে হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য আছমা বেগম বলেন, সেতুটির বিষয়ে চেয়ারম্যান মহোদয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে এবং এই অর্থবছরে কিছু বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

সেতু নির্মানের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে জেলা পরিষদের নিবার্হী প্রকৌশলী বিরল বড়ুয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদেবার্তা দিয়েও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।