অস্রুসিক্ত নয়নে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে তামিমের ‘বিদায়’

চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের আগে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক তামিম ইকবালের বক্তব্য নিয়ে গত দু’দিন ধরে চলেছে নানামুখী আলোচনা সমালোচনা। এরমাঝে ম্যাচ হেরে গতকাল রাত থেকেই গুঞ্জন জোরালো হচ্ছিলো। আর সেই গুঞ্জন সত্য করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন তামিম।

বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) চট্টগ্রামের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে তামিম বিদায় জানিয়ে দিলেন সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে। গত বছর ১৬ জুলাই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী তামিম। এবার ওয়ানডে ও টেস্ট থেকেও অবসরের ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ওপেনার।

সংবাদ সম্মেলনে অশ্রুসজল চোখে তামিম বলেছেন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকালের ম্যাচটিই আমার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এই মুহূর্ত থেকে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি। সিদ্ধান্তটি হুট করে নেওয়া নয়। অনেকদিন ধরেই আমি এটা নিয়ে ভাবছি। পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেছি এটা নিয়ে।

জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে কোলাহলের মধ্যে তামিম এসে সবাইকে অনুরোধ করেন, আল্লাহর ওয়াস্তে আমাকে দুইটা মিনিট কথা বলতে দেন। এরপর অবসরের ঘোষণার প্রসঙ্গ টেনে তামিম বলেছেন, আমার কাছে মনে হয়েছে এটাই সঠিক সময় সরে দাঁড়ানোর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। সবাইকে ধন্যবাদ জানানো প্রয়োজন।

অস্রুসিক্ত নয়নে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে তামিমের 'বিদায়' 1

এরপর তামিমের গলা ধরে আসে। কান্নাভেজা কণ্ঠে কিছুটা ডুকরে উঠে সময় নিয়ে বলেন, আমি সব সময়ই একটা বলেছি, আমি ক্রিকেট খেলি আমার বাবার স্বপ্নপূরণের জন্য।

বিদায় বেলায় তামিম ধন্যবাদ বলেন, সতীর্থ, কোচ, পরিবার ও সমর্থকদের, ক্যারিয়ারের এই দীর্ঘ পথচলায় আমার সব সতীর্থ, সব কোচ, বিসিবির কর্মকর্তাগণ, আমার পরিবার ও যারা আমার পাশে ছিলেন, নানাভাবে সহায়তা করেছেন, ভরসা রেখেছেন এবং আমার ভক্ত-সমর্থক, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনুসারী, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের। ২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কেনিয়ার বিপক্ষে দেশের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের ঘরের মাঠে এই সংস্করণেই তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেন তামিম। ২৪১ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩৬.৬২ গড়ে ৮৩১৩ রান করেছেন, সেঞ্চুরি ১৪টি, ফিফটি ৫৬টি।

টেস্টে ৭০ ম্যাচে ৩৮.৮৯ গড়ে ৫১৩৪ রান করেছেন তামিম। সেঞ্চুরি ১০টি ও ফিফটি ৩১টি। এই সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ও সেঞ্চুরি করেছেন তামিম।

টি–টোয়েন্টিতে ৭৪ ম্যাচে ১৭০১ রান করেছেন তামিম। এই সংস্করণে দেশের হয়ে শুধু তামিমই সেঞ্চুরি করেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৫ সেঞ্চুরি করা তামিম তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১৫ হাজারের বেশি রান করেছেন। দেশের আর কোনো ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এত রান করতে পারেননি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।