অ্যাডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার দলের দুর্দিনে দায়িত্ব পালন করেছেন—পর্যটন প্রতিমন্ত্রী

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেছেন অ্যাডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার সারাজীবন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত ছিলেন। কখনো কোন অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণ ও বিনয়ী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধেও বিচক্ষণ সংগঠক ছিলেন। নুরুচ্ছফা তালুকদার দলের দুর্দিনে দায়িত্ব পালন করেছেন কিন্তু কখনো আত্মপ্রচারে লিপ্ত ছিলেন না।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বিভিন্ন মামলার আসামী হয়ে দলের ছেলেরা জেলে ছিল। তাদের মধ্যে অনেকের টাকা পয়সা ছিল না। সেই সময়ে কিছু আইনজীবী ছিল যারা দলের কর্মীদের আইনি সহায়তার পাশাপাশি অর্থিক সহায়তাও দিতেন। এডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার তাদের মধ্যে অন্যতম বক্তিত্ব। আইনজীবী হিসেবে আদালত পাড়ায় সুখ্যাতি থাকা সত্ত্বেও তাঁর বিনয়িতা আমাদের কাছে অনুকরণীয়। তিনি বিনয়ের মাধ্যমে সকল মানুষের হৃদয়ে রেখাপাত করে গেছেন।

রোববার (১২ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রামের কোর্টহিলস্থ আইনজীবী অডিটোরিয়ামে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের পিতা মরহুম অ্যাডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদারের ১২তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি স্মরণসভার আয়োজন করেন।

পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লিখতে হলে নুরুচ্ছফা তালুকদারের অবদান বাদ দিয়ে লেখা যাবেনা। অকৃপণচিত্তে স্মরণ করতে হবে তাঁর অবদান। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই, তবে তিনি যোগ্য সন্তানদের রেখে গেছেন। নুরুচ্ছফা তালুকদারের ব্যক্তিত্ব আমাদের সমাজকে শাণিত করছে এবং করবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত হয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার অত্যন্ত আন্তরিক ব্যক্তি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। আমরা অনেকেরই স্মরণসভা করি তবে একটা পর্যায়ে এসে আমরা ভুলে যাই। সময়ের প্রেক্ষাপটে এটা হতে বাধ্য। শুধুমাত্র যারা ইতিহাসে স্থান করে নেয় তাদের নাম ইতিহাসে থেকে যায় বিভিন্নভাবে। তাদের স্মরণসভাও আমরা একসময় করি না। কিন্তু শত শত বছর পরে আমরা যদি ইতিহাসের পাতা উল্টাই সেখানে তাদের নাম অক্ষয় হয়ে বেঁচে থাকে।

স্মরণসভায় এডডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদারের সহধর্মিণী এডভোকেট কামরুন্নাহার ও তাঁর তৃতীয় সন্তান খালেদ মাহমুদ মরহুমের আত্মার শান্তির জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।
বক্তারা এডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদারের বর্নাঢ্য জীবনের স্মৃতিচারণ করেন এবং তাঁর আদর্শকে ধারণ করে নবীন আইনজীবীদের আইনপেশায় নিয়োজিত হওয়ার আহ্বান জানান।

স্মরণ সভায় চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুলের সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ ড. আজিজ আহমেদ ভূঞা, চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছা, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য এড. এ.এস.এম. বদরুল আনোয়ার, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড. এ.এস.এম. বজলুর রশীদ মিন্টু বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন।

অন্যান্যের মধ্যে সাবেক বার কাউন্সিল সদস্য অ্যাডভোকেট মজিবুল হক, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনোয়ার চৌধুরী, সাবেক সভাপতি ও জেলা পিপি অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনতোষ বড়ুয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট অশোক দাশ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন ও এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি সেকান্দর চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এম এ নাসের চৌধুরী, অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার, অ্যাডভোকেট সুভাষ বড়ুয়া, অ্যাডভোকেট কাজী এখতিয়ার রোমান, অ্যাডভোকেট আবু মনসুর, অ্যাডভোকেট দিদারুল আলম, অ্যাডভোকেট রবিউল আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।