আগামীর বিজিএমইএ’র জন্য রোডম্যাপ তৈরি করছি— ফয়সাল সামাদ

দেশের রফতানি আয়ে ৮৪ শতাংশ অবদান পোশাক খাতের। এ খাতের মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। বিজিএমইএ’র পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন হয়েছে গত এপ্রিলে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী নির্বাচন হবে ২০২৩ সালের এপ্রিলে। তার মানে নির্বাচনের বাকি আর ১২-১৩ মাস। তবে ইতিমধ্যে বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট- ফোরাম সংগঠনটির আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য নিজেদের প্যানেল লিডার হিসেবে ফয়সাল সামাদের নাম ঘোষণা করেছে।

তিনি একাধিকবার বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক পাস করা এই শিল্পোদ্যোক্তা বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন সুরমা গার্মেন্টস, সাভার টেক্সটাইলসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের। আগামীর বিজিএমইএ গড়তে এখন থেকেই ৫ বছরের জন্য রোডম্যাপ তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। শুধু রোডম্যাপ নয়, ঢাকা-চট্টগ্রামের সব সমস্যা এক টেবিলে এনে একসঙ্গে বসে সমাধান করার লক্ষে পোশাকশিল্প মালিকদের ধারে ধারে যাচ্ছেন এই নেতা। প্রচারণার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

ফয়সাল সামাদ বলেন, ২৫ বছর ধরে আমি বিজিএমইএ’র সঙ্গে সম্পৃক্ত। আনিসুল হকের সময় এবং পরে দুইবার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলাম। বিজিএমইএ পরিচালনায় আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে। আগামী নির্বাচনের জন্য আমাকে ফোরাম দলনেতা হিসেবে ঘোষণা করেছে। সেজন্য আমি এখন থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি। কারণ নেতা হতে হলে আমাকে প্রত্যোক গার্মেন্টস মালিকের কাছে যেতে হবে। তাদের সমস্যাগুলো বুঝতে হবে। মালিকদের ইস্যুগুলো আমি জানি, তারপরও আমাকে আরও জানতে হবে। যেমন কয়েকদিন আগে আমি চট্টগ্রামে গিয়েছি। সেখানে পাঁচটি কারখানা পরিদর্শন করেছি। এসব কারখানার মালিকদের কাছে শুনতে চেয়েছি তাদের কোন কোন সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। যদি নির্বাচন করতে হয় আমার পলিসি কি হবে সেটা আমাকে বুঝতে হবে। শুধু এজেন্ডা দিলে হবে না। কাস্টমস-ব্যাংকে এখনও সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধানে আমাকে আরও ভালোভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমি আগামী ১০ মাস প্রত্যক মালিকের কাছে যাব। সেটার ওপর ভিত্তি করে আগামী বিজিএমই’র কী কী কাজ করা দরকার তার আলোকে একটি রোডম্যাপ তৈরি করবো। শুধু দুই বছর নয়, আমি পরবর্তী ৫ বছরের জন্য এই রোডম্যাপ তৈরি করবো। জয়ী হলে সেটা আমি বাস্তবায়ন করবোই। এছাড়া পরবর্তী যারা আসবেন তারাও এই রোডম্যাপ অনুসরণ করতে পারবেন।

এই শিল্পোদ্যোক্তা বলেন, কারখানায় ৮০ ভাগেরও বেশি নারী শ্রমিক। এখন শ্রমিকের একটা বড় সংকট চলছে। এখন অনেক অর্ডার আসছে। ছোট-মাঝারি-বড় কারখানা সবারই কাজ আছে। তার মানে শ্রমিক দরকার। এজন্য আমাদের শ্রমিকের সংখ্যা বাড়াতে হবে। নারী-পুরুষ শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তৈরি করতে হবে।

ফয়সাল সামাদ বলেন, করোনাকালীন যে অর্ডারগুলো স্থগিত হয়েছিল এখন সেগুলো ফেরত এসেছে। বেশ বড়ভাবে ফেরত এসেছে। তবে সুতা-কাপড়ের দাম বেড়েছে। এজন্য এখন ভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে। অর্ডার আসছে, ডেলিভারিও হচ্ছে। কিন্তু লাভের পরিমাণ কমে গেছে। আমাদের এটা নিয়েও এখন ভাবতে হবে। কারণ অর্ডার থাকলে তো হবে না, লাভের কথাও চিন্তা করতে হবে। এছাড়া আগামীর বিজিএমইএ হবে ভিন্ন বিজিএমইএ। কারণ জিএসপি উঠে যাবে। আমার টার্গেট হচ্ছে এখন থেকে আমি মালিক ভাই-বোনদের সঙ্গে কথা বলে একটি রোডম্যাপ তেরি করবো। এই রোডম্যাপই হবে আগামীর বিজিএমইএ।

তিনি বলেন, আমি ফোরামের প্যানেল লিডার। ফোরামের দলীয় সভাপতি এশিয়ান গ্রুপের সালাম ভাই (মোহাম্মদ আবদুস সালাম)। ঢাকা-চট্টগ্রাম মিলে তিনি দলীয় সভাপতি। আগে শুধু ঢাকা থেকে ফোরাম সভাপতি হতো। এবার চট্টগ্রাম থেকে সভাপতি হয়েছে। সালাম ভাই কাজ করছেন ঢাকা-চট্টগ্রাামের ভেতরে। এটার সুবিধা হচ্ছে আমরা ঢাকা-চট্টগ্রামের সব সমস্যা এক টেবিলে এনে পরিষদের মাধ্যমে ভালোভাবে সমাধান করতে উদ্যোগ নিতে পারছি এবং উদ্যোগ নিব। সেটা এনবিআর হোক, কাস্টমস হোক কিংবা বন্ড হোক।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।