চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ব্যাপক হারে বেড়েছে গরু চুরির ঘটনা। প্রায় প্রতি রাতেই বিভিন্ন গ্রামে হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ চোরের দল। এতে আতঙ্কে রয়েছেন ঐ অঞ্চলের চাষী ও খামারিরা। গরু চুরি ঠেকাতে রাত জেগে খামার পাহারা দিচ্ছেন অনেকে। তবে একের পর এক চুরি ঘটনা ঘটলেও পুলিশ-প্রশাসনের কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
রোববার (৬ আগস্ট) রাতে উপজেলার বটতলী ইউনিয়নের চাঁপাতলী এলাকার মোহাম্মদ সাইফুর রহমানের গোয়ালঘর থেকে ২টি গরু চুরির ঘটনা ঘটে। ভোরে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ভোলাশাহ্ মাজার এলাকার পরিত্যাক্ত জমিতে জবাই করা গরুর মাথা ও হাড় পাওয়া যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত গরুর মালিক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, গরু চুরির ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারি না। একটু আওয়াজ হলে উঠে পড়ি। রাত জেগে খামার পাহারা দিতে হয় আমাদের। চোররা তাদের কৌশল পাল্টিয়ে গোয়াল ঘর থেকে দুইটি গরু চুরি করে বাড়ির পাশ্ববর্তী স্থানে নিয়ে জবাই করে মাংস নিয়ে গেছে। আর রেখে গেছে গরুর মাথা ও হাড়গুলো। প্রতিটি গরুর দাম এক-দেড় লাখ টাকা। সহায়-সম্বল বিনিয়োগ করে ও ঋণ নিয়ে গরু পালন করেছি। মাথা আর হাড়গুলো সকালে এলাকার এতিমখানায় দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ১৪ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা ৪ নম্বর বটতলী ইউনিয়ন ৫ নম্বর ওয়ার্ডে পূর্ব বটতলী গ্রামের সিরাজ উদ্দীন বলির বাড়ি ইয়ার মুহাম্মদ আনোয়ার (৫০) চুরি হওয়া গরুর খন্ড মাথা আর পা রেখে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এরপর গত ১৮ জুলাই মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নে খান বাড়ি কৃষক কালামিয়া নামে এক ব্যক্তির আনুমানিক ১ লাখ টাকার একটি গরু চুরি করে পাশ্ববর্তী পাহাড়ি এলাকায় জবাইকৃত গরুর চামড়া, মাথা ও নাড়িভুঁড়ি রেখে যায় অজ্ঞাতরা।
এদিকে গরু চুরির অভিযোগ পেয়ে গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের সিংহরা এলাকায় একটি জামে মসজিদে স্থানীয় সাংসদ ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি তার বক্তব্যে থানার ওসিকে গরু চুরি দমনে কঠোর নির্দেশ দেন।
এদিকে একের পর এক চুরি ঘটনা ঘটলেও গরু উদ্ধার বা চোর গ্রেপ্তার করতে পুলিশ ব্যর্থ হচ্ছেন বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের। তারা বলছেন, গরু চোরদের জন্য আমাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। আমাদের কষ্টে লালন পালন করা পশু এভাবে চুরি হওয়া মোটেও সুখকর নয়। আমরা দ্রুত এই ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহমেদ বলেন, আজকে গরু চুরি ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। দুইটি গরু চুরির মামলায় চিহিৃত ৪ জন গরু চোরকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠিয়েছি। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে আমরা নিয়মিত টহল আরও জোরদার করেছি। গরু চুরি ঠেকাতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।