চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বন্য হাতির তান্ডব থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয়দের তৈরি বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের খান বাড়ির ফকির খিল বিলে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোর নাম মোহাম্মদ জাহেদ (১৫)।
তিনি বৈরাগ খান বাড়ির আবদুল হাফেজের পুত্র। এসময় তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে ফাঁদে আটকে গুরুতর আহত হয়েছেন নিহতের চাচাতো ভাই আমির খান (২৪) ও গোল বাহার বেগম (৪০) নারী এক নারী।
সোমবার সন্ধ্যায় নিহতের বাড়ি ও ঘটনাস্থলে সরেজমিনে গিয়ে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে পাহাড় থেকে ৪টি বন্য হাতির দল বৈরাগ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসে। হাতির পালটি ওই এলাকায় দিনে বা রাতে তান্ডব চালাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তান্ডব থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয়রা ফকির খিল বিলের কৃষি জমিতে তৈরি করে বৈদুতিক ফাঁদ।
এদিকে আজ বিকেলে বিলের মধ্যে থাকা গরু আনতে গিয়ে ফাঁদে বিদ্যুতায়িত হন মোহাম্মদ জাহেদ। তার চিৎকারে পাশ্ববর্তীতে থাকা নারীসহ দুইজন উদ্ধার করতে গিয়ে তারাও বিদ্যুতায়িত হয়। এলাকাবাসী পরে ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক জাহেদকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যান। সন্ধ্যায় পুলিশ মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে পাঠায়।
নিহতের মামাতো ভাই মো. শাকিল বলেন, হাতির তান্ডব থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয়রা কৃষি জমি জুড়ে টাঙিয়েছেন কভার বিহীন তার। দিনের বেলায় হাতি না আসলেও এসব তারে দিয়ে রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ লাইন। এসব তার চোখে পর্যন্ত ভালো করে দেখা যায়। আর তারা দিয়েছে হাতি মারার ফাঁদ হিসেবে। বিকেলে আমরা দূর থেকে কাটা মুরগীর মত বিলের পানির মধ্যে চটপট করতে দেখে ছুঁটে আসি। তাকে উদ্ধার করতে এসেও আমরাও আহত হয়।
অন্যদিকে উপজেলার বরুমছড়া ইউনিয়নের ভরাচর এলাকায় রাজমিস্ত্রি কাজ করার সময় মো. হানিফ (২০) নামে এক যুবক বিদ্যুৎপৃষ্টে নিহত হয়েছে। সে একই এলাকার আবু তাহেরের ছেলে।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, বিদ্যুৎপৃষ্টে যুবক নিহতের সংবাদ পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে আনোয়ারা পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. মোরশেদুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করে রিসিভ না করায় কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।



মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।