আনোয়ারায় কর্মজীবী নারীদের শিশুর জন্য ইউএনওর ডে কেয়ার

গৃহকর্মী সংকটে কর্মজীবী মা-বাবারা দিশাহারা। সন্তানকে গৃহকর্মীর কাছে রেখেও চিন্তার শেষ নেই। বাচ্চা খেয়েছে তো? কোনো বিপদ হলো না তো? কর্মজীবী মা-বাবার এমন হাজারো চিন্তার সমাধান হতে পারে ডে কেয়ার সেন্টার বা শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র।

তাদের এ সমস্যার কথা চিন্তা করেই চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ ডে কেয়ার সেন্টার তৈরি করেছেন।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পুরাতন কার্যালয়ে ডে কেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। কার্যক্রম পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম.এ মান্নান চৌধুরী, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল মুমিন, চাতরীর চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন চৌধুরী সোহেল, সদরের চেয়ারম্যান অসীম কুমার দেব, আল্লামা আবুল খাইর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সোহাইল সালেহ্, প্রকল্প সমন্বয়কারী আবরার নেওয়াজ প্রমূখ।

৮শ বর্গফুটের দুটি কক্ষে অত্যাধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নান্দনিক পরিবেশে তৈরি করা হয়েছে ডে কেয়ার সেন্টারটি। এছাড়াও সেখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে নিরাপত্তার বিষয়টি। ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে আল্লামা আবুল খাইর ফাউন্ডেশন।

যারা ডে কেয়ার সেন্টারে বাচ্চা রাখবেন তাদের জন্য ন্যূনতম ফি নির্ধারণ করা হবে। যার যে রকম আয় তার সে রকম ফি নির্ধারণ করা হবে। প্রথমে এখানে ১০ জন বাচ্চা রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাদের দেখাশোনা করার জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২ জন নারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই ডে কেয়ার সেন্টারে উপজেলার সরকারি দফতরে কর্মজীবী নারীদের বাচ্চারা অগ্রাধিকার পাবে। এরপর পাবে সরকারি স্কুল-কলেজ, ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বাচ্চারা।

আগ্রহী কর্মজীবী মায়েরা তাদের ৬ বছরের চেয়ে ছোট বাচ্চাকে এই ডে কেয়ার সেন্টারে রাখতে পারবেন। বাচ্চাটির পরিবারের বার্ষিক আয় কত তার ওপর ভিত্তি করে মাসিক সেবামূল্য নির্ধারণ করা হবে। প্রতি রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল হতে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ডে কেয়ার সেন্টারটি খোলা থাকবে। শুক্রবার ও শনিবার এবং সরকারি ছুটির দিনে বন্ধ থাকবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম.এ মান্নান চৌধুরী বলেন, উপজেলার মধ্যে ডে কেয়ার সেন্টার বা শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র একটিও নেই। আসলেই এটি একটি ভালো উদ্যোগ আমাদের ইউএনও মহোদয়ের। ধন্যবাদ জানাই ইউএনও মহোদয় ও আল্লামা আবুল খাইর ফাউন্ডেশনকে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, নিজের ছোট সন্তানকে নিয়ে কর্মজীবী মায়েদের যে কতটুকু উদ্বেগ, উৎকন্ঠা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পূর্বতন কক্ষটিকে ডে কেয়ার সেন্টারে রূপান্তরের পরিকল্পনা করেছিলাম।

তিনি আরও বলেন, ভালোবাসা সহিত মাতৃ যত্নে লালন-পালনের নিশ্চয়তাসহ সারা দিনের যত্নের পাশাপাশি প্রি-স্কুলিং, আঁকা, গান গাওয়া, নাচসহ ইত্যাদির প্রাথমিক শিক্ষাও থাকবে। সিসি ক্যামরায় রয়েছে নজরদারী। বলতে গেলে শিক্ষা ও খেলাধুলা সাথে বেড়ে উঠা শিশুর দ্বিতীয় বাড়িই এটি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।