ইউজিসির অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা ও হিসাব ম্যানুয়াল প্রত্যাখ্যান চবি শিক্ষক সমিতির

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের জন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক প্রণীত অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা ও হিসাব ম্যানুয়াল প্রত্যাখ্যান করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। শুক্রবার (২৩ জুন) সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞতিতে জানানো হয়, সম্প্রতি ইউজিসি কর্তৃক দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জুলাই থেকে প্রতিপালনের জন্য প্রেরিত অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা ও হিসাব ম্যানুয়াল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সর্বাত্মকভাবে প্রত্যাখ্যান করছে এবং দেশের স্বায়ত্তশাসিত সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠসমূহের শিক্ষকগণ এবং শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অবদান রাখার পরিবর্তে বিদ্যমান সুবিধা সংকুচিত করে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করার প্রচেষ্টা গ্রহণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে স্বায়ত্তশাসন প্রদানের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালযে উচ্চ স্তরের শিক্ষা ও গবেষণাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি এবং তার উৎকর্ষতা সাধনে সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করার সুবিধার্থে একই বছর মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশ নম্বর ১০ এর মাধ্যমে ইউজিসিকেও স্বায়ত্তশাসন প্রদান করেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, সেই মূলনীতি থেকে সরে এসে ইউজিসি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ এবং শিক্ষা ও গবেষণার মনোনয়নের পথে উল্টো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা করতে দেখা যায় যা কোন অবস্থাতেই মেনে নেয়া যায় না।

অধিকন্তু, সর্বোচ্চ অঙ্গীকারাবদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও সরকারের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে সঙ্গতি রেখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগণের যথাযথ মর্যাদা ও আর্থিক সুবিধাদি (সুদমুক্ত গাড়ি ঋন, গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা, বেতন স্কেলে সুপার গ্রেড, পাচক ভাতা, দারোয়ান ভাতা, অফিসিয়াল পাসপোর্ট, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স, গাড়ি প্রাপ্তির প্রাধিকার ইত্যাদি) নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ইউজিসিকে কখনো নূন্যতম কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি, যা জাতির জন্য চরম হতাশাজনক।

এতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার অদম্য নেতৃত্বে করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকালীন বিশ্বমন্দা পরিস্থিতিতেও দেশ যখন বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলার রূপ পরিগ্রহ করার পথে অপ্রতিরোধ্য গতিতে ধাবমান তখন বিশেষ কোন মহলের প্ররোচনায় ইউজিসি প্রেরিত এই নীতিমালা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকগণকে সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার প্রচেষ্টা কিনা তা যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা প্রযোজন বলে চবি শিক্ষক সমিতি মনে করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গনসমূহের পরিবেশ সুস্থ-সাবলীল এবং শিক্ষকগণের মান-মর্যাদা সমুন্নত রাখার স্বার্থে চবি শিক্ষক সমিতি ইউজিসি কর্তৃক প্রণীত এই অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা ও হিসাব ম্যানুয়াল পুনরায় প্রত্যাখ্যান করছে এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণকে কোনক্রমেই চরম হঠকারী এই নীতিমালা কার্যকরের উদ্যোগ গ্রহণ না করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।