‘উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ’- রাজশাহীতে খুন করে চট্টগ্রামে ধরা

উচ্চশব্দে গান বাজাতে নিষেধ করায় এক যুবককে হত্যার ঘটনায় রাজশাহী থেকে চট্টগ্রামে এসে পালিয়ে থাকা তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৭। সম্পর্কে তারা বাবা-মা ও ছেলে। শনিবার (১৩ আগস্ট) রাতে সীতাকুণ্ডের মাদাম বিবির হাট ও উত্তর সলিমপুর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. বকুল আলী (৪৫), তার স্ত্রী আমেনা (৪০) ও তাদের ছেলে মো. নাহিদ হোসেন (২০)।

র্যাব-৭ এর উপ-অধিনায়ক মেজর রেজওয়ানুর রহমান চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, এই ঘটনার ভিক্টিম মুকুল আলী (৪৫) ঘটনার দিন ১ আগস্ট রাতে তার ঘরে অন্তসত্ত্বা মেয়ে থাকায় গ্রেফতার আসামিদের বাসায় গিয়ে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করেন। এসময় আসামির ছেলে নাহিদ প্রথমে গানের ভলিউম কমিয়ে দেন।

পরে মুকুল আলী তার বাসায় চলে গেলে আবারও গানের ভলিউম বাড়িয়ে দেয় নাহিদ। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় ভিক্টিম মুকুল পুনরায় এসে গানের ভলিউম কমাতে বলেন। এতে করে ক্ষুব্ধ হয়ে নাহিদ তার বাবা বকুল আলী ও তার মা আমেনা ভিক্টিম মুকুলকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে।

এছাড়া চাকু দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম করেন। মুকুলের চিৎকার শুনে তার ছোট ছেলে শাহীন আলম ও জামাই আলমগীর সেখানে গেলে তাদেরকেও মারধর ও চাকু দিয়ে আঘাত করে জখম করে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা মুকুলকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে আসামীরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত মুকুলকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তিনি মারা যান।

রেজওয়ানুর রহমান আরও বলেন, দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিলো। ছাগল পালন, হাঁস-মুরগি পালন, পুকুরে মাছ পালন এসব নিয়ে একপক্ষ আরেক পক্ষের সাথে লেগে থাকতো। যা পরবর্তীতে স্থানীয় থানায় অভিযোগও হয়। এসব নিয়ে মূলত দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকে এই ঘটনা।

ঘটনার সময় নাহিদের বাবা বকুল তার ছেলে নাহিদকে রড আনতে বলে। তাৎক্ষণিক সে রড না পেয়ে ছুরি নিয়ে আসে। সেই দিয়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। তারপর রড খুঁজে এনে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়।

এই ঘটনায় ভিক্টিমের ছেলে বাদী হয়ে রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানায় আট জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করে মামলা করেন। মামলার পর মূল আসামি স্বামী, স্ত্রী, সন্তান তিনজনই পালিয়ে চট্টগ্রামে চলে আসেন। এবং রাজমিস্ত্রীর কাজ নেন। বাকী পাঁচ আসামি মাখদুম থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের মাখদুম থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এমএইচকে/এসএইচ

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।