উপকূলে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’

ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে আন্দামান সাগরে সৃষ্টি হতে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’। তবে ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ ঠিক কোনদিকে হবে, তা এখনও জানা যায়নি।

পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকাতে এটি আছড়ে পড়তে পারে। এছাড়া আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এটি উপকূলে আঘাত হানার সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত হবে।

এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ইতোমধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধ্র প্রদেশসহ একাধিক রাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শনিবার বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পূর্বদিকে পৌঁছে যাবে নিম্নচাপটি। আগামীকালের মধ্যে তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। মঙ্গলবারের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলে পৌঁছে যাবে।

ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে প্রবেশের সময় বাতাসের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার। এর ফলে ‘সিত্রং’ কতটা ভয়াবহ হতে পারে, সেটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আঘাত হানা তিনটি বড় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ এবং ক্ষয়ক্ষতি থেকে অনুমান করা যেতে পারে।

বিগত বছরগুলোতেও একাধিক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিলো দেশে। এর আগে ২০২১ সালের ২৬ মে ভারতের ওড়িশায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’। যার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬৫ কিলোমিটার। যার প্রভাবে শুধুমাত্র বাংলাদেশেই তিন হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। মৃত্যু হয় সাত জনের। তার আগে ২০২০ সালের ১৩ মে ভারত এবং বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানে সুপার সাইক্লোন ‘আম্ফান’।

যার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৬০ কিলোমিটার। শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ১,৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছিল। একইসঙ্গে আম্ফানের কারণে ভারত, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কায় ১২৮ জনের মৃত্যু হয়।এছাড়া ২০১৯ সালের ৩ মে উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’।

যার প্রভাবে ৮১০ কোটি মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশ এবং ভারতে ৮৯ জনের মৃত্যু হয়। এদিকে আন্দামান সাগরের চলমান ঘূর্ণাবর্তটি প্রতিনিয়ত শক্তি বাড়ালেও এখনও ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়নি। তবে আবহাওয়াবিদদের মতে, এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।