ব্যাংকের বিপুল টাকা মেরে দিয়ে ঋণখেলাপি হওয়া জসিম উদ্দিন এবার প্রতারণার আশ্রয় নিলো হাইকোর্টের সঙ্গে। অর্থঋণ আদালতের দেওয়া আদেশ স্থগিত করতে তিনি উচ্চ আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায় তাকে আবার গ্রেপ্তারের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ঋণখেলাপি জসিম বর্তমানে চন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যান।
বুধবার (১০ জুলাই) চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এই আদেশ দেন বলে চট্টগ্রাম খবরকে নিশ্চিত করেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ঋণখেলাপির মামলায় জসীম উদ্দিন ও তার স্ত্রী তানজিনা সুলতানার বিরুদ্ধে আদালত ৫ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে গত ২০ এপ্রিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। আসামি পক্ষ গত ২ মে থেকে ১৪ মে পর্যন্ত ১২ দিনে ১৭টি পে অর্ডারের মাধ্যমে ১৪ কোটি পরিশোধ করেছে বলে উচ্চ আদালতে তথ্য দিয়ে অর্থঋণ আদালতের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ আনে। কিন্তু ১৪ কোটি টাকা পরিশোধের তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
ডিক্রিদার ব্যাংক আপিল বিভাগে আবেদন করলে আদালত ৪ জুলাই পর্যন্ত তাকে দুই দফা সময় দেন। কিন্তু ঋণখেলাপি জসিম পে-অর্ডারের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধের কোনো প্রমাণ আদালতে দাখিল করতে পারেননি। এরই প্রেক্ষিতে ইতোপূর্বে দেওয়া তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ওপর স্থগিতাদেশ তুলে নেন আদালত।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে পদ্মা ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে জেসিকা ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার জসিম উদ্দিন ৬০ কোটি টাকা ঋণ নেন। নগরের লালদীঘি এলাকার ১৬ দশমিক ৫৯ শতক জমির ওপর নির্মিত সাততলা মহল মার্কেট ঋণের বিপরীতে ব্যাংকের কাছে জামানত রেখেছেন। এক বছরের মধ্যে পরিশোধ করার চুক্তি থাকলেও তা করেননি। ২০২২ সালে সম্পূর্ণ সুদ মওকুফ–সুবিধা নিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করেন।
ঋণ শোধ না করে বিলাসী জীবন যাপনে অভ্যস্থ জসীমের সেই ঋণ সুদাসলে প্রায় ৮৯ কোটি টাকা হয়েছে। ২০২০ সালের ১৮ জুলাই ঋণ শোধ না করায় পদ্মা ব্যাংক জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে মামলা করে। মামলায় গত ২৯ জানুয়ারি জসীমকে সুদসহ ঋণ পরিশোধের নির্দেশ দেন আদালত। তারপরও ঋণ শোধ না করায় তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।
কক্সবাজারের তারকা হোটেল রামাদার এমডি জসীম উদ্দিন ও তার স্ত্রী তানজিনা সুলতানার বিরুদ্ধে গত ৩০ এপ্রিল পাঁচ মাসের দেওয়ানি কারাদণ্ড দেন আদালত। জসীম উদ্দিন কিন্তু প্রকাশ্যে সভা সমাবেশ করলেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।