এক টুকরো পৃথিবী ইস্ট ডেল্টায়

হঠাৎ মনে হতে পারে কোনো আন্তর্জাতিক মহাসম্মিলন। যেন বিশ্বের প্রায় প্রতিটি প্রান্তের বৈচিত্রপূর্ণ সাংস্কৃতিক আবহের দেশগুলোর মানুষেরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির (ইডিইউ) ইন্টারেকশন জোনে। ব্রাজিলের পাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছে চীন-জাপানের লোকজন। কিংবা শ্রীলঙ্কার ঠিক উল্টো দিকেই নিজেদের সংস্কৃতির ডালা খুলে বসেছে পেরু। আদতেই যেন এক টুকরো পৃথিবী হয়ে উঠেছে ইডিইউ।

গ্লোবাল ভিলেজ থিম নিয়ে সাজানো হয়েছে অ্যাক্সেস অ্যাকাডেমির এবারের কোর্সওয়ার্ক মেরাকি-১০। এই কোর্সওয়ার্কে অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে ১৭টি দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সকাল ১০টায় ইডিইউর খুলশীস্থ ক্যাম্পাসে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়, যা শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। এতে প্রদর্শিত দেশগুলো হলো গ্রিস, নেপাল, ইরান, মরক্কো, জাপান, চীন, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল, শ্রীলঙ্কা, কোরিয়া, কেনিয়া, পেরু, তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, ভিয়েতনাম ও মিশর।

‘মেরাকি’ শব্দটি গ্রিক, যার অর্থ ভালোবেসে কাজ করা। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়ানো এবং এসব কাজের প্রতি তাদের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি করা এর অন্যতম লক্ষ্য। প্রচলিত পরীক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের উন্নতি ও মেধা যাচাইয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই কোর্সওয়ার্কগুলো। এছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে দলগত কাজ করার প্রবণতা ও নেতৃত্ব তৈরি করাও এর লক্ষ্য।

গ্লোবাল ভিলেজ থিমকে পরিপূর্ণতা দিতে অংশগ্রহণকারীরা তাদের দেশগুলোর খাবার, সাজ-পোশাক থেকে শুরু করে ঐতিহ্যবাহী, সাংস্কৃতিক ও জাতিগত পরিচিতির উপাদানসমূহের পশরা সাজিয়ে স্টলগুলো রাঙিয়ে তোলে। এসময় স্টল পরিদর্শনকারীদের সেসব দেশ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেয় তারা। তাদের অনেকেই সেসব দেশের ভাষায় কুশল বিনিময়ও করেন অতিথিদের সঙ্গে। পরে বিকেলে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এসব দেশের ঐতিহ্যবাহী নাচ-গান, মুকাভিনয়সহ হরেক রকমের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিবেশন করে তারা।

শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক তারতম্য এবং ঘাটতিগুলো কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সব শিক্ষার্থীকে সমমানের করে তুলতে কাজ করছে এই অ্যাক্সেস অ্যাকাডেমি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান বলেন, বিশ্বকে ধারণ করে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি। তাই ইডিইউ শিক্ষার্থীদের বিশ্বসংস্কৃতির সাথে পরিচিত করে তোলার পাশাপাশি নিয়ে যাচ্ছে বিশ্বমঞ্চেও। শিক্ষার্থীদের বিদেশে নিয়ে গিয়ে সেখানকার বিভিন্ন বড় ও নামী প্রতিষ্ঠানগুলো কিভাবে পরিচালিত হয়, সে অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষভাবে অর্জনের সুযোগ করে দিতে ইডিইউতে শুরু হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গ্লোবাল লিডারশিপ এক্সপেরিয়েন্স প্রোগ্রাম।

উপাচার্য অধ্যাপক মু. সিকান্দার খান বলেন, বিশ্ব নাগরিক হয়ে ওঠার দর্শনই এ আয়োজনের সারকথা। শিক্ষার্থীরা প্রকৃতই বিশ্বকে ধারণ করতে শিখছে, হয়ে উঠছে আন্তর্জাতিক। এর ফলে সেসব দেশে গেলে কিংবা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সেসব নাগরিকদের সঙ্গে নিজেকে আরো পরিশীলিতভাবে মেলে ধরতে পারবে।

এতে আরো উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সামস উদ-দোহা, রেজিস্ট্রার সজল কান্তি বড়ুয়াসহ স্কুলসমূহের ডিন, ফ্যাকাল্টি মেম্বার, অ্যাক্সেস অ্যাকাডেমির ইনস্ট্রাকটর ও কর্মকর্তাবৃন্দ।

মেরাকি-১০ এ মোট চারটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হয়। বেস্ট ডেকোরেশনে বিজয়ী হয়েছে জাপান, বেস্ট কস্টিউমে গ্রিস, বেস্ট প্রেজেন্টেশনে নেপাল এবং বেস্ট পারফর্মেন্স ক্যাটাগরিতে বিজয়ী শ্রীলঙ্কা।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।