এভারেস্ট বিজয়ী ডা. বাবরের পদচিহ্ন এবার লোৎসে

চট্টগ্রামের হালদা পাড়ের সন্তান ডা. বাবর আলী পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ এভারেস্ট জয়ের পর এবার ২৭ হাজার ৯৪০ ফুট উচ্চতার লোৎসে জয় করলেন। বাংলাদেশি পর্বতারোহীদের মধ্যে একই যাত্রায় এভারেস্ট ও লোৎসে জয়ী একজনই, তিনি ডা. বাবর আলী। দেশের প্রথম ডাবল-হেডার বাবর আলী সুস্থ ও নিরাপদ আছেন। শিগগিরই তিনি দেশে ফিরবেন।

মঙ্গলবার (২১ মে) ভোর ৬.০৫টায় তিনি লোৎসে সামিট সম্পন্ন করেছেন বলে চট্টগ্রাম খবরকে নিশ্চিত করেছেন অভিযানের সমন্বয়ক ফরহান জামান। ডা. বাবর এর আগে গত রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় দীর্ঘ ১১ বছর পর এভারেস্টে সফল ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়েছেন।

বাবর আলীর এভারেস্ট যাত্রার প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান সোমবার বলেন, রোববার এভারেস্ট সামিট শেষে তিনি বেসক্যাম্প-৪এ বিশ্রামে ছিলেন। সোমবার রাতে তিনি লোৎসে সামিটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। আজ ভোর ৬.০৫টায় তিনি লোৎসে সামিট সম্পন্ন করেছেন।

তাঁর এই সাফল্যে গর্বিত পিতা-মাতা, ব্যারিস্টার বড় ভাই, বিচারক একমাত্র ছোটবোন এবং মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন র্কমর্কতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ছোট ভাই দেশবাসীর কাছে বাবর আলীর সুস্থ ও নিরাপদে ফিরে আসার জন্য দোয়া চেয়েছেন।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বুডিশ্বচরে জন্ম নেওয়া এই তরুণ পেশায় একজন চিকিৎসক। নানা স্বেচ্ছাসেবী কাজে তার সুনাম রয়েছে। করোনায় তার ভূমিকাও বেশ প্রশংসার ছিল। সব কিছুকে পিছনে রেখে পাহাড় প্রেমী হিসেবেই নিজেকে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন চট্টগ্রাম মেডিকেলে কলেজের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. বাবর আলী।

২০১৪ সালেই ক্লাব কর্তৃক আয়োজিত নেপালে এক হিমালয় অভিযানে বাবর সামিট করেন এক পাঁচ হাজার মিটার উচ্চতার পর্বত। সেই তার হিমালয়ে পথচলা শুরু। এরপর পর্বতারোহণের বিশুদ্ধতম ধরণ বলে পরিচিত আল্পাইন স্টাইলে ২০১৬ সালে ক্লাব থেকে সামিট হয় ভারতের মাউন্ট ইয়ানাম, যা ছিল বাংলাদেশ থেকে প্রথমবার কোন ২০ হাজার ফুট উচ্চতার পর্বত সামিট এবং সেই দলের সদস্য ছিলেন তিনি।

পর্বতারোহণকে ধ্যানজ্ঞান মেনে তিনি বেসিক মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স করেন ভারতের নেহেরু ইন্সটিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং থেকে। ২০১৪ সাল থেকে প্রায় প্রতিবছর করেছেন এক বা একাধিক হিমালয় অভিযান। এছাড়াও নিজেকে উপযুক্ত করে তুলতে বাবর নিয়মিত দৌঁড়ান, করেছেন ক্রস কান্ট্রি সাইক্লিং, করেন কায়াকিং, পায়ে হেঁটে টানা ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেছেন সিঙ্গেল ইজার প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে।
২০২৩ সালে তিনি ভারতের সর্ব উত্তরের কাশ্মীর থেকে সর্ব দক্ষিণের বিন্দু কন্যাকুমারী পর্যন্ত সাইকেল চালিয়েছেন।

এই অভিযানে মোট খরচ হচ্ছে ৪৫ লক্ষ টাকা। যাতে মূল পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছেন ভিজ্যুয়াল নীটওয়্যার লিমিটেড। এছাড়া সহ-পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ঢাকা ডাইর্ভাস ক্লাব, বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ব্লু জে, চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী, গিরি, ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স।
এছাড়াও অভিযানের জন্য গণ তহবিল সংগ্রহে অংশ নিয়েছেন দেশ-বিদেশের নানা সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠন এবং অগণিত শুভাকাঙ্ক্ষী। অভিযানের সার্বিক সমন্বয় করেছে ডা. বাবর আলীর নিজের ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।