মাতৃভাষায় সাংবাদিকতার সুরক্ষা ও বিকাশে অন্তর্ভুক্তিমূলক গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সার্কভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে গৃহীত সাত দফা ঘোষণায় ‘কাঠমান্ডু ডিক্লারেশনে’ এ আহ্বান উঠে আসে।
ঘোষণাপত্রে স্থানীয় ও আদিবাসী ভাষাভিত্তিক গণমাধ্যমকে রক্ষা ও বিকাশে সরকারপ্রধানদের নীতিগত অঙ্গীকার এবং রাষ্ট্রীয় সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরা হয়। বিশেষত সম্প্রদায়ভিত্তিক ভাষায় সাংবাদিকতাকে সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ ও সামাজিক ন্যায়বিচারের শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এসব ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর জন্য তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর প্ল্যাটফর্ম নিশ্চিত করার ওপর জোর দেওয়া হয়।
ন্যাশনাল ফোরাম অব নিউয়ার জার্নালিস্টস (এনএফএনজে)-এর আয়োজনে এবং সার্ক জার্নালিস্টস ফোরাম (এসজেএফ) ও ফেডারেশন অব নেপাল ইন্ডিজেনাস জার্নালিস্টস (ফনিজ)-এর সহায়তায় আয়োজিত এই সম্মেলনে সার্ক অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা অংশ নেন। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন নেপালের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার দেবরাজ ঘিমিরে এবং সমাপনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যপুর থিমি মিউনিসিপ্যালিটির মেয়র সুরেন্দ্র শ্রেষ্ঠ।
ঘোষণায় মাতৃভাষাভিত্তিক সাংবাদিকদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও ফেলোশিপ আয়োজনের সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি অর্থায়ন, কারিগরি সহায়তা ও দক্ষতা উন্নয়নে অগ্রাধিকার প্রদানের আহ্বান জানানো হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে মেয়র সুরেন্দ্র শ্রেষ্ঠ বলেন, এই সম্মেলন মাতৃভাষা সাংবাদিকতা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সার্ক জার্নালিস্টস ফোরামের সভাপতি রাজু লামা সম্মেলনের গৃহীত প্রস্তাব দ্রুত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্যোগে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সমর্থন প্রত্যাশা করেন।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ফনিজ সভাপতি লাকি চৌধুরী, এসজেএফ’র কেন্দ্রীয় মহাসচিব মো. আবদুর রহমান (বাংলাদেশ), বিহার চ্যাপ্টারের সভাপতি ড. শশী ভূষণ কুমার, সম্মেলন সমন্বয়ক সুনীল মহার্জন ও এনএফএনজের মহাসচিব কেকে মানান্ধর।
ঘোষণাপত্রে জানানো হয়, সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো সার্কভুক্ত দেশগুলোর সরকারপ্রধানদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করা হবে এবং জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ চলবে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।