টানা বর্ষণে উজান থেকে বয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে কচুরিপানার জট বেঁধেছে। আর এতে করে কাপ্তাই জেটিঘাট থেকে বিলাইছড়ি কিংবা রাঙামাটি নৌ-চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নৌপথে চলাচল করা যাত্রীদের।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সকালে কাপ্তাই হ্রদের আপষ্ট্রিম জেটিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কচুরিপানায় ছেয়ে গেছে পুরো কাপ্তাই হ্রদের বিশাল একটি অংশ। কচুরিপানার বিশাল জটে আটকা পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত করছে ইঞ্জিনচালিত বোটের পাখা। এতে বাধ্য হয়ে নৌ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
কাপ্তাই জেটিঘাটের বোটচালক শফিকুল আহমেদ বলেন, হ্রদে কচুরিপানার বিশাল জট সৃষ্টি হওয়ায় কাপ্তাই-বিলাইছড়ি লাইনের নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, গত বুধবার একটি ইঞ্জিনচলিত বোট জেটিঘাট হতে বিলাইছড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলে মাঝ পথে কচুরিপানার জটে আটকে পড়ে। শেষ পর্যন্ত গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে না পারার কারণে পিছনে ফিরে আসতে হয়েছে।
এদিকে কাপ্তাই জেটিঘাটের আরেক বোটচালক সুমন দাশ বলেন, গত এক সপ্তাহ যাবৎ কাপ্তাই লেকে লাগাতার বৃষ্টির ফলে চারদিক হতে ছুঁটে আসে কচুরিপানা। লেকের বিভিন্ন এলাকা হতে কচুরিপানা এসে জেটিঘাট ব্যবসায়ী কেন্দ্র, কার্গো, জেলেপাড়া, সোয়া মিলসহ বিভিন্ন এলাকায় জট সৃষ্টি করেছে। এতে নৌ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
কাপ্তাই বোট-মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহিন বুলবুল বলেন, বর্তমানে কচুরিপানার জটলাতে পড়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে ৫ মিনিটের জায়গায় ঘন্টার পর ঘন্টা লেগে যাচ্ছে। এতে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
কাপ্তাই জেটিঘাট অপেক্ষমান কয়েকজন যাত্রীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, বিশাল কচুরিপানার জট লাগার ফলে ঠিকভাবে আমরা চলাফেরা করতে পারছি না। অনেক সময় আমাদের এখানে আত্মীয় কিংবা হোটেলে থেকে যেতে হচ্ছে। যতক্ষণ নৌ চলাচল স্বাভাবিক হবে না, ততক্ষণ এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে।
এদিকে সম্প্রতি কয়েকজন চালক কচুরিপানার মাঝে ইঞ্জিনচলিত বোট চালাতে গিয়ে বোটের পাখা ভেঙে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। অন্যদিকে প্রচুর পরিমান তৈল, মবিল খরচ হচ্ছে বলে অনেক চালক মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে ৪ নম্বর কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুল লতিফ বলেন, কচুরিপানার জটের ফলে এলাকার সর্বস্তরের লোকজনের ক্ষতি হচ্ছে। ইতিমধ্যে একটি পরিবার হ্রদে আটকে পড়ায় বহু কষ্ট করে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যবস্থাপকের সাথে যোগাযোগ রাখছি কচুরিপানার জট অপসারণের জন্য। ইতিমধ্যে পিডিবি কর্তৃপক্ষ কিছু কচুরিপানার জট অপসারণ করেছে বলে জেনেছি। সামনে আরোও কিছু অপসারণ করা হবে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।