কাপড় খুলে নৌ যাতায়াত দূর্ভোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

ঘাট ব্যবস্থাপনায় নৌ বাহিনীকে সম্পৃক্ত করার দাবী

সন্দ্বীপ চট্টগ্রাম নৌ রুটে মধ্যযুগীয় ভোগান্তি ও অনিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থার প্রতিবাদে জামা খুলে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রামের একমাত্র দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের নাগরিকরা। মানববন্ধনে এই রুটে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি ও হয়রানির জন্য চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ও একটি সংঘবদ্ধ অসাধু সিন্ডিকেটকে দায়ী করে বক্তারা হুশিয়ারি দিয়ে বলেন ভোগান্তির প্রতিবাদে আজ নিজেদের জামা খুললেও সামনে এই ভোগান্তি সৃষ্টি করা সিন্ডিকেটবাজদের জামাও খুলে ফেলা হবে।

সোমবার(২৫ এপ্রিল) দুপুর ১২ টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্ত্বরে সন্দ্বীপ এসোসিয়েশনের উদ্যোগে এই মানববন্ধন আয়োজিত হয়। ভোগান্তী থেকে মুক্তি পেতে এবং নিরাপদ ঘাট পরিচালনায় বাংলাদেশ নৌ বাহিনীকে সম্পৃক্ত করারও দাবী জানানো হয়।

এসোসিয়েশনের সভাপতি এডভোকেট রিদোয়ানুর বারীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই মানব বন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘দীর্ঘদিন এই নৌ রুটে জেলা পরিষদ ৯০ হাজার টাকা দৈনিক ইজারা নিচ্ছে। অথচ এখানে সেবার মান উন্নয়নে তাদের কোন ভূমিকা নেই। আমরা এই রুটে যাতায়াত করি মধ্যযুগীয় কায়দায়। জামা কাপড় খুলে আমাদের আসা যাওয়া করতে হয় তাই আমরা এই ভোগান্তির প্রতিবাদও করছি জামা কাপড় খুলে।’

জেলা পরিষদের ভূমিকার সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, ‘দূর্ঘটনার কয়েকদিন আগে জেলা পরিষদের কাছে আমরা গিয়েছিলাম। জেলা পরিষদ জানিয়েছে স্পীডবোট কাদের তারা জানেন না। তারা চান এটি বন্ধ হোক৷ অথচ বাস্তবতা হলো এই স্পীডবোট থেকেই জেলা পরিষদ প্রতিদিন ৯০ হাজার টাকা ইজারা দেয়। এত টাকা দেশের আর কোন নৌ ঘাট থেকে ইজারা দেয় না। তবু আমরা সেবা পাইনা। তাছাড়া যে নৌযানের দায়িত্ব কেউ নেয়না সেটা দিনের পর দিন চলতে পারেনা। কিন্তু মানুষকে জিম্মি করে কিছু অসাধু চক্র লুটপাট করার জন্য এই সংকট জিইয়ে রাখছে।’

এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের হুশিয়ার করে বক্তারা বলেন, ‘আজ আমরা জামা খুলে প্রতিবাদ করছি। সামনে প্রয়োজন হলে এই ভোগান্তির পেছনে যে অবৈধ সিন্ডিকেট জড়িত তাদের জামাও আমরা খুলে ফেলবো।’

এক্ষেত্রে সরকারি ব্যবস্থাপনায় দ্রুত এই রুটে নৌ যাতায়াতের ভোগান্তি দূর করতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তারা বলেন, ‘এখানে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দায়িত্ব দিতে হবে। যারা দায়িত্ব নিতে চায়না শুধু টাকা কামাতে চায় তাদেরকে আমরা চাইনা। প্রয়োজনে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানেও এখানে ঘাট চলতে পারে। নিরাপদ ও পর্যাপ্ত আধুনিক নৌ যানের ব্যবস্থাও সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে রোগী আনা নেয়ার জন্য চালক সহ দুটো সী এম্বুলেন্স দিতে হবে।’

সভায় বক্তব্য রাখেন দৈনিক সমকালের ব্যুরো প্রধান সারোয়ার সুমন, ডেইলি বিজনেস পোস্টের সিনিয়র রিপোর্টার ও ব্যুরো প্রধান সালেহ নোমান, সন্দ্বীপ এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা সারোয়ার জামিল শামীম, সিডিএর সাবেক বোর্ড মেম্বার রোমানা নাসরিন, সরকারি কার্গিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম লিংকন, লায়ন্স ক্লাব সন্দ্বীপের সভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন, সন্দ্বীপ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোসাদ্দেক আহমেদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য বাবর উদ্দিন সাগর, অধিকার কর্মী আব্দুল কাদের মানিক, অধিকার কর্মী খাদেমুল ইসলাম, দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনের রিপোর্টার আবু রায়হান তানিন, সন্দ্বীপ ছাত্রফোরাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ইমতিয়াজ কবির, সন্দ্বীপ ফ্রেন্ড সার্কেল এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শরীফুল আলম সৌরভ প্রমুখ।

সন্দ্বীপ এসোসিয়েশন, সন্দ্বীপ লায়ন্স ক্লাব, সন্দ্বীপ ছাত্র ফোরাম চবি, স্বপ্নচূড়ার সদস্যরা সহ সন্দ্বীপের বিভিন্ন পেশার লোকজন এই মানববন্ধনে অংশ নেয়।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।