চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, “আসন্ন কোরবানের ঈদের আগেই সৈকতে অবৈধ দখলদারদের সরিয়ে সৈকতের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা হবে। সৈকতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, পর্যাপ্ত বাতি স্থাপন ও শৌচাগার নির্মাণসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত তদারকি করার জন্যেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সভায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ও পারকিসহ জেলার সকল সমুদ্র সৈকতের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং পর্যটন উন্নয়ন ও সংশ্লিষ্ট কার্যাবলী সমন্বয়ে জন্য চট্টগ্রাম বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভায় বিশদ আলোচনা করা হয়।
এছাড়া চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ও পারকিসহ জেলার সকল সমুদ্র সৈকতের নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা এবং পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাদির ব্যবস্থা, অবকাঠামো নির্মাণ, সৈকতের সার্বিক উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবস্থাপনার নিমিত্ত মাষ্টার প্ল্যান তৈরীর বিষয়ে কমিটির সদস্যবৃন্দ তাদের বক্তব্য প্রদান করেন।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, একইসাথে খাবারের মূল্য তালিকা প্রদর্শন, নির্দিষ্ট মূল্য তালিকা, খাবারের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সহায়তায় খাবার দোকানিদের প্রশিক্ষণ প্রদান, সৈকত হতে ঘোড়াসহ সকল গাড়ি অপসারণ এবং সী সাইড হতে সকল দোকান কান্ট্রি সাইডে নির্দিষ্ট পরিমাপের করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এতে চট্টগ্রাম বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্হিত ছিলেন।
বিস্তারিত আলোচনা শেষে বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভায় নিম্নবর্ণিত সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করা হয়
• ঈদুল-উল-আযহার পূর্বে সী সাইড থেকে সরিয়ে কান্ট্রি সাইডে বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি দেয়া নিদিষ্ট মাপ অনুয়ায়ী দোকান ঘর তৈরি করতে হবে।
• বীচ এলাকায় বরাদ্দকৃত দোকানগুলোতে অবশ্যই মান সম্মত খাবার পরিবেশন করতে হবে।
• বীচ এলাকায় বরাদ্দপ্রাপ্ত দোকানদারকে নিজ খরচে অস্থায়ী দোকান ঘর নির্মাণ করতে হবে।
• বীচ সংশ্লিষ্ট এলাকায় পর্যটকদের সুবিধা সম্বলিত অবকাঠামো নির্মাণ করা।
• বীচ সংশ্লিষ্ট এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনয়ন।
• বীচ সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্থায়ী/অস্থায়ী অফিস স্হাপন।
• সমুদ্র সৈকতের জন্য মাস্টার প্লান তৈরি করা।
• মাস্টার প্লান বাস্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত সৈকতের দোকানসমূহ সুশৃঙ্খল ও পুনর্বাসন করা।
• বীচ এলাকায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য ইউনিফর্মধারী সেবক নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
• বীচ সংশ্লিষ্ট এলাকায় যথাযথ সেবা প্রদানের নিমিত্ত গাড়ী পার্কিং, বিভিন্ন সেবা গুলোকে জোন ভিত্তিতে ভাগ করা।
• পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের আদলে সাজানো।
• বীচের গেজেট ভূক্ত এলাকা চিহ্নিত করে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও অবৈধ দখলদারদের পূর্ণবাসন পূর্বক উচ্ছেদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ৷
• বীচ সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ব্যবস্থা নেয়া।
• পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধাদির ব্যবস্থাসহ সৈকতের সার্বিক উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবস্থাপনাসহ বিদেশী পর্যটকদের জন্য সৈকতে এক্সক্লুসিভ জোন নির্ধারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা।
• পর্যাপ্ত টয়লেট, শৌচাগার, চেঞ্জিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া নির্মাণের ব্যবস্হা গ্রহণ।
• বীচ এলাকায় ফটোগ্রাফারসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানকারীদের সংখ্যা নির্দিষ্টকরণ, সাময়িক পরিচয়পত্র প্রদান, সেবা মূল্য নির্ধারণ এবং এক্ষেত্রে সমন্বিত ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা।
• বীচ এলাকায় খাবারের দোকানসমূহে বাজার মূল্যের সাথে সংগতি রেখে খাদ্য তালিকা প্রতিটি দোকানে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। খাবারের মান বজায় রাখতে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক নিয়মিত মনিটরের ব্যবস্হা গ্রহণ করতে হবে।
• পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের উন্নয়নের বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের জন্য একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়।
• বীচ এলাকায় পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য ট্যুরিষ্ট পুলিশের শেড/অফিস নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।