ক্লাস বন্ধ, জাতীয়করণের আন্দোলনে শিক্ষকরা

দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের (সরকারিকরণ) দাবিতে বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ রেখে ঢাকাস্থ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ন্যায্য অধিকার আদায়ে লাগাতার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন রাঙামাটির লংগদু উপজেলার এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরা।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সকালে উপজেলার বিদ্যালয়গুলোতে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষের ফটকগুলো বন্ধ রয়েছে এবং পাশাপাশি বিদ্যালয়ের অফিস সংলগ্নে কর্মবিরতির ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি লংগদু উপজেলার শাখার সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম চৌধুরী জানান, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অধিকাংশই এমপিওভুক্ত। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে বেতনের মূল অংশসহ কিছু ভাতা পান। দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। তারাই পরিপ্রেক্ষিতে লাগাতার আন্দোলনে সামিল হয়েছে উপজেলার কিছু সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারী। তবে আমরা যথাযথ উদ্যোগ নিতে না পারলেও সমর্থন করি এ আন্দোলনকে।

আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা বলছেন, প্রথমে কিছুসংখ্যক শিক্ষক এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের উদ্যোগ নিলেও পরবর্তীতে উপজেলার এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ রেখে এ কর্মসূচিতে সামিল হয়েছেন অনেকেই। এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

এদিকে অভিভাবকেরা জানান, শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পড়াশোনার সাথে সম্পৃক্ততা কম শিক্ষার্থীদের। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী এ বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সকল প্রকার মূল্যায়ন ও বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করতে হবে। সব মিলিয়ে তিন মাস সময় রয়েছে, তন্মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষার দেওয়া সিলেবাস শেষ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং ভালো ফলাফল অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়াও শিক্ষা ব্যবস্থায় এবার নতুন পাঠ্যক্রম সংযোজন করা হয়েছে। তাই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় শিক্ষকদের শ্রেণি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

তারা আরও বলেন, বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঠিকই যাচ্ছে কিন্তু শিক্ষকরা শ্রেণির কার্যক্রম স্থগিত করেছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের সময় ও শ্রম দুটোই বিফলে যাচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আন্দোলনে যোগদান দিতে না পারলেও একত্বতা প্রকাশ করেছেন, পাশাপাশি কর্ম বিরতি পালন করছেন এবং আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাকসুদুর রহমান জানান, সরকারি ঘোষিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী দেশের সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রবিবার (২৩ জুলাই) থেকে যথাযথ নিয়মানুযায়ী শ্রেণি কার্যক্রম চালিয়ে যেতে। এর ব্যত্যয় ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অবগত করবো।

লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকিব ওসমান বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্লাস বঞ্চিত করে শিক্ষকদের আন্দোলনে যোগদানের কোনো সুযোগ নেই। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানও সরকারের আওতাধীন। সুতরাং সরকার ঘোষিত প্রজ্ঞাপন না মেনে ক্লাস স্থগিত বা বন্ধ করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।