ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ—ড. অনুপম সেন

বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি এ দেশের অমূল্য সম্পদ বলে মন্তব্য করেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সমাজ বিজ্ঞানী প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন। তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক নানা উপাদান এসব জাতিগোষ্ঠীর সক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। জাতীয় উন্নয়নের জন্যই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতির বিকাশে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দরকার। দেশের সংখ্যাগুরু মানুষের উচিত সংখ্যায় কম মানুষের সংস্কৃতির বিকাশে এগিয়ে আসা। ভাষা যদি না থাকে, তবে সংস্কৃতি বিলুপ্ত হবে। তাই প্রয়োজন বাংলাদেশের অনেক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতির সঠিক লালন।

সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অমর একুশে বইমেলা মঞ্চে নৃগোষ্ঠী উৎসবের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক ড. আজাদ বুলবুলের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজুরী চৌধুরী, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পুরস্কার প্রাপ্ত গুণীজন মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, নাবিক ও প্রবাসী কল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক সুমন বড়ুয়া, কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বই মেলা কমিটির আহবায়ক কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। এসময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা রাণী চাকমা।

ড. সেন বলেন ক্ষুদ্র সংস্কৃতির বিকাশে সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মান্ধতাকে বড় অন্তরায়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও জাতিসত্ত্বাসমূহের অধিবাসীদের মধ্যে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চংগ্যা, ম্রো, লুসাই, বোম, পাংখোয়া, খুমি, চাক, খেয়াং প্রভৃতি উপজাতি রয়েছে। অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির উপাদান মানুষে মানুষে বিভাজন রুখতে পারে। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর আন্তরিকতা ও উদারতার ধারা অব্যাহত ছিল। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর শাসনামলেই পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীয় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বৈদেশিক বৃত্তি মঞ্জুর করা হয়।

তিনি আরও বলেন ,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ১৯৯৬ সাল থেকে একটি নীতিমালার আলোকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে “বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত)” শীর্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা শুরু করা হয় এবং কর্মসূচিটি চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের আশা-আকাঙক্ষা ও প্রত্যাশা পূরণে সর্বদা সচেষ্ট। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অন্যতম অঙ্গীকার হচ্ছে,টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ১৭টি লক্ষ্য থেকে কোনো জাতিগোষ্ঠীই বাদ পড়বে না।

উৎসবে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের উপজাতীয় গান ও নৃত্য শিল্পীরা অংশগ্রহণ করেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।