খাতুনগঞ্জে পিকআপ—ট্রাক প্রবেশের দ্বন্দ্বে শ্রমিক মাসুদ হত্যা, আটক ২

চট্টগ্রাম নগরীর ভোগ্য পন্যের পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জে ছোট পিকআপ আর বড় ট্রাক প্রবেশের দ্বন্দ্বে শ্রমিক সর্দার মাসুদকে খুন করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। সেই হত্যাকাণ্ডে দুই দিন অচল থেকে বৃহস্পতিবার সকালে খাতুনগঞ্জ সচল হওয়ার রাতে হত্যায় জড়িত সোহাগ ও সাইদুল হোসেন নামে দুই সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালী থানার ওসি অপারেশন রুবেল হাওলাদার বলেন, সিসি ক্যামরার ফুটেজ দেখে প্রথমে সোহাগকে শনাক্ত করে বাকলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাইদুলকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কুমিল্লা, নারায়নগঞ্জ ও ব্রাহ্মনবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে অবশেষে গ্রেপ্তারে সক্ষম হই।

হত্যার কারণ জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, শ্রমিকদের সাথে পিকআপ চালকদের দ্বন্দ্ব পুরোনো। শ্রমিকদের দাবি ছিল সড়কে ছোটগাড়ি প্রবেশ যেন না করে। তারা যুক্তি দিয়েছে ছোটগাড়ি বেপরোয়া গতিতে চলে। তাই তারা বড় গাড়িই কেবল প্রবেশ করতে দাবি জানিয়েছিল, যেটা মালিক পক্ষও মেনে নিয়েছে। তারপর সেদিন পিকআপ পার্কিং করায় সকালে শ্রমিক সর্দার মাসুদের সাথে সাইদুলের তর্ক হয়। সেই তর্কের জেরে সে সন্ধ্যায় মাসুদের ওপর হামলা চালায়।

আটককৃতদের বরাতে পুলিশ জানায়, মাসুদ হত্যায় পলাতক আসামি রাসেল মিয়ার সাথে গত ১৭ অক্টোবর খাতুনগঞ্জস্থ চাঁন মিয়া লেইন সামির ট্রেডিং নামক প্রতিষ্ঠানের সামনে রাস্তার ওপর পিকআপ পার্কিং নিয়ে নিয়ে কথা কাটিকাটি হয়। পরে রাসেল সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে সন্ধ্যায় আবার মাসুদের ওপর হামলা চালায়। তখন আত্মরাক্ষায় লেবার মাঝি মাসুদ তার কাছে থাকা মালামাল লোড আনলোডের হুক দিয়ে আসামীদেরকে আঘাত করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে সাইদুল হোসেন তার পকেট থেকে টিপ ছোরা বের করে ভিকটিমকে ছুরিকাঘাত পালিয়ে যায়।

মাসুদেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ১৯ অক্টোবর সকালে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। তার মৃত্যুতে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে শ্রমিকরা কাজে ফিরেন।

এই ঘটনায় নিহত মাসুদের ছেলে মোঃ বাবুল বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন (২১(১০)২২, ধারা-১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩০৭/৩২৬/৫০৬)। মাসুদ হত্যাকাণ্ডে ওসি অপারেশন্স রুবেল হাওলাদারের নেতৃত্বে এসআই মোমিনুল হাসান ও মৃণাল কান্তি মজুমদারের সমন্বয়ে গঠিত টিম আসামিদের আটক করে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।