খাসজমি বরাদ্দের প্রলোভনে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

খাসজমি লিজের প্রলোভন দেখিয়ে জলবায়ু উদ্ভাস্তু—নদী ভাঙা ভূমিহীনদের প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানাধীন চন্দ্র নগরের এরশাদ নগর এলকায় জেলা প্রশাসকের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অযুহাতে এসব টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। এসব বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা ও বিভিন্নভাবে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (৯ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
ভুক্তভোগী সিরাজ সওদাগরের সভাপতিত্বে লাকী আক্তার, পারুল বেগম, মো. বাহার, পারভীন বেগম, আবদুল মালেক, কুলসুম বেগম, আনু বেগম ও তানিয়া বেগমসহ প্রায় দুই শতাধিক ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ভিটেমাটি—ভূমি হারানো বেশকিছু পরিবার এরশাদ নগর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাসজমিতে বসবাস করে আসছে। জায়গাটি জেলা প্রশাসক বরাবর লিজের জন্য আবেদনের একটা কপি দেখিয়ে প্রতি পরিবার থেকে হাতিয়ে নিয়েছে ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা। আর এই কাজের নেতৃত্বে রয়েছে শেখ রফিকুল আলমসহ একটি চক্র।

ভুক্তভোগীরা পরবর্তীতে জানতে পারে, জেলা প্রশাসকের নাম ভাঙিয়ে নেওয়া এসব টাকার সঙ্গে জেলা প্রশাসক এবং জেলা প্রশাসনের কোন কর্মকর্তার সম্পৃক্ত নেই। তাদের থেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে মারধর, মিথ্যা মামলা ও বিভিন্ন হয়রানি করা হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্থরা আরও জানান, রফিকের নামে নারী নির্যাতন ও চাঁদাবাজিসহ ৯টি মামলা রয়েছে। রফিক নিজেকে কোথাও রাজনৈতিক বড় বড় নেতাদের বন্ধুবান্ধব পরিচয় দেয়, আবার কোথাও কোথাও কোর্টের মুন্সি পরিচয়ে এসব অপকর্ম চালিয়ে আসছে। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলকাবাসী। এছাড়া এসব কর্কাণ্ডের বিষয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করলে তাঁদেরকেও মিথ্যা মামলা দিয়ে এবং বিভিন্ন হয়রানি করা হচ্ছে।

চক্রটিকে আইনের আওতায় এনে ভূমিহীনদের কষ্টার্জিত টাকাগুলো উদ্ধারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জেলা প্রশাসক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

শেখ রফিকুল আলম বলেন, আমার প্রচেষ্টায় ২ দশমিক ১০ একর জায়গা সরকার থেকে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে নগরে আসা মানুষজন বরাদ্ধ পেয়েছেন। আরও ৬ দশমিক ৯০ একর প্রকিয়াধীন আছে। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়েছে মুলত পেটকাটা বাবর (র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে নিহত) আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা। আমি কোনো টাকা নিইনি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।