গণভবনকে ‘জুলাই ছাত্র গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি যাদুঘর’ হিসাবে প্রতিষ্ঠার সরকারী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ৭ প্রস্তাব রেখেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন সংগঠনটির নেতারা।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মানবতাবিরোধী গণহত্যার পরিকল্পনাকারী, আদেশদাতা ও হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখা।
লিখিত বক্তব্য বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখা সদস্য ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নে (সিএমইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ধরে মানবাধিকার আর ভোটাধিকার হরণের মাধ্যমে জগদ্দল পাথরের মত জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছিল। তার সরকার মেগা প্রজেক্ট, মেগা করাপশন আর মেগা মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে দেশ ও অর্থনীতিকে এক দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় নিয়ে গেছে।’
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচির পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেতা অধ্যাপক নসরুল কদির, ইঞ্জিনিয়ার সেলিম মোহাম্মদ জানে আলম, অ্যাডভোকেট এনামুল হক, ডা. হারুন, ডা. আব্বাস, অ্রাডভোকেট হাসান আলী, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত, ইঞ্জিনিয়ার আতিকুজ্জামান বিল্লা, জসিম উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার সুমন, অ্যাডভোকেট মফিজউল্লাহ,অ্যাডভোকেট সানজি ও ইঞ্জিনিয়ার কিবরিয়া প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার পক্ষ থেকে ৭টি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবনাগুলো হলো
বিভিন্ন পেশার বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিত্ব ও বিদগ্ধজনদের সমন্বয়ে একটি ‘জাতীয় সংস্কার কমিশন’ গঠন করে তার সুপারিশনামার আলোকে সংবিধান, বিচার বিভাগ, প্রশাসন সহ সর্বস্তরে একটি মৌলিক সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ।
গত ১৫ বছর ধরে গুম, খুনে জড়িতদের এবং সর্বশেষ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মানবতা বিরোধী গণহত্যার পরিকল্পনাকারী, আদেশদাতা ও হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা।
প্রশাসন, বিচার বিভাগ, সংবাদমাধ্যমসহ রাষ্ট্র আর তার সহযোগী অর্গানসমূহে ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদ কায়েম আর দুর্নীতির হোতাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিগত দিনে জেল, জুলুম আর চাকুরিচ্যুতির কারণে অমানবিক পরিস্থিতি শিকার ব্যক্তিবর্গকে সসম্মানে পূনর্বহাল ও ক্ষতিপূরণ প্রদান।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের অর্থনৈতিক দায়িত্বভার রাষ্ট্রের কর্তৃত্বে আনয়ন, আহত, পঙ্গুত্ববরণকারীদের উন্নত চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা গ্রহণ।
ব্যাংকখাতে লুটপাট আর লক্ষকোটি টাকা পাচারকারী রাজনীতিবিদ, আমলাদের শাস্তি নিশ্চিত, সম্পদ বাজেয়াপ্ত, পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার জন্য দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।
দুঃশাসনের দূর্গ হিসাবে কুখ্যাত গণভবনকে ‘জুলাই ছাত্র গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি যাদুঘর’ হিসাবে প্রতিষ্ঠার সরকারী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।
একইসাথে ছাত্র গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে প্রদর্শিত বীরত্বগাঁথা, পটভূমি, ভালোবাসা ও নিষ্ঠুরতা, শ্লোগান-গ্রাফিতি, আন্দোলনের সঞ্জিবনী শক্তি হিসাবে ব্যবহৃত শ্লোগান, সংগীত, ছাত্রী-মহিলাদের সাহসী উচ্চারণ আর অংশগ্রহণ সবকিছুকে উপজীব্য করে ডকুমেন্টারী, নাটক, সিনেমা, গানসহ গবেষণাধর্মী প্রকাশনায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।