দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন আলোচনার কেন্দ্রে গণভোটের সময় নির্ধারণ। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এক্ষেত্রে বিপরীত অবস্থানে, আর জাতীয় জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত না করে নির্বাচনে যেতে চায় না জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এমন অবস্থায় নির্বাচন ঘিরে নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নির্বাচন বিলম্ব ঠেকাতে বিএনপি শেষ পর্যন্ত কিছু ছাড় দেবে। তবে গণভোট আগে হবে না নির্বাচনের দিনেই হবে—এই প্রশ্নে দুই দলে বিভক্ত বিশ্লেষক সমাজ। কেউ মনে করছেন, জনগণকে জটিল বিষয় বুঝতে সময় দেওয়া জরুরি, আবার কেউ বলছেন, গণভোট ও নির্বাচন একই দিনে হলে তা সাংবিধানিক জটিলতা তৈরি করতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আহমেদ বলেন, “আইনগত আদেশ দেয়ার এখতিয়ার প্রধান উপদেষ্টার নয়, এটি প্রেসিডেন্ট দিতে পারেন। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে এলে বিএনপি শেষ পর্যন্ত তাতে আপত্তি জানাবে না, কারণ তাদের প্রধান উদ্বেগ নির্বাচন পিছিয়ে যাওয়া।”
অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ সাহান মনে করেন, নভেম্বরের মধ্যে গণভোট আয়োজন অবাস্তব। তিনি বলেন, ৪৮টি সাংবিধানিক প্রস্তাবের বিষয়ে জনগণকে বোঝানো জরুরি। এক মাসে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাড়াহুড়ো করলে গণভোট রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
অ্যাডভোকেট আবু হেনা রাজ্জাকী ভিন্ন মত দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি না থাকায় গণভোট আগে হওয়া আবশ্যক। তার ভাষায়, যখন জনগণের নামে গণভোট হবে, তখন সেটি আইনি স্বীকৃতি দেবে নির্বাচনের কাঠামোকে। আগে এই ভিত্তি নিশ্চিত না করে নির্বাচন হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
যদিও বিশ্লেষকরা আশাবাদী যে, গণভোটের মূল বিষয় নিয়ে দলগুলোর সম্মতি থাকায় শেষ পর্যন্ত ইগো ত্যাগ করে রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। তাঁরা মনে করেন, যথাসময়ে নির্বাচন আয়োজনই হবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রধান শর্ত।



মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।