গাইনি সার্জারি, জানুন সবকিছু

গাইনি সার্জারি হল নারীদের প্রজনন অঙ্গের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসার জন্য করা এক ধরনের অস্ত্রোপচার। এটি নারীদের স্বাস্থ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং অনেক সমস্যার সমাধানের জন্য এই সার্জারি করা হয়।

কেন গাইনি সার্জারি করা হয়?

গাইনি সার্জারির কারণ অনেকগুলো হতে পারে, যেমন:
• ফাইব্রয়েড: জরায়ুর মাংসপেশির অতিরিক্ত বৃদ্ধি।
• এন্ডোমেট্রিওসিস: জরায়ুর ভেতরের আস্তরণের মতো টিস্যু জরায়ুর বাইরে বেড়ে যাওয়া।
• ওভারিয়ান সিস্ট: ডিম্বাশয়ে তরল পূর্ণ থলির মতো গঠন।
• জরায়ুর ক্যান্সার: জরায়ুর কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি।
• ফ্যালোপিয়ান টিউব ব্লক: ফ্যালোপিয়ান টিউব বন্ধ হয়ে যাওয়া।
• প্রোলাপ্স: জরায়ু, মূত্রথলি বা মলদ্বারের নিচের দিকে নেমে যাওয়া।
• অন্যান্য: অন্যান্য অনেক সমস্যা, যেমন জন্মগত ত্রুটি, সংক্রমণ ইত্যাদি।

গাইনি সার্জারির ধরন
গাইনি সার্জারির বিভিন্ন ধরন রয়েছে, যেমন:
• ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি: ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে পেটে একটি ক্যামেরা এবং যন্ত্রপাতি প্রবেশ করে এই সার্জারি করা হয়।
• হিস্টেরেকটমি: জরায়ু অপসারণ।
• মাইওমেকটমি: ফাইব্রয়েড অপসারণ।
• ওভারেকটমি: ডিম্বাশয় অপসারণ।
• সিস্টেকটমি: ডিম্বাশয়ের সিস্ট অপসারণ।
গাইনি সার্জারির আগে, পরে এবং সময়
• আগে: সার্জারির আগে আপনার ডাক্তার আপনাকে একটি পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং আপনার মেডিকেল ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাইবেন।
• সময়: সার্জারির সময় আপনাকে অজ্ঞান করে দেওয়া হবে।
• পরে: সার্জারির পর আপনাকে কিছু সময় হাসপাতালে থাকতে হতে পারে। আপনার ডাক্তার আপনাকে ব্যথা নিরাময়ের ওষুধ এবং সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারেন।

গাইনি সার্জারির সুবিধা
• রোগ নিরাময়: অনেক গাইনি সমস্যার চিকিৎসার জন্য গাইনি সার্জারি সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি।
• জীবনযাত্রার মান উন্নতি: গাইনি সার্জারির মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করে আপনার জীবনযাত্রার মান উন্নত করা যায়।
• কম আক্রমণাত্মক: ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারির মতো কিছু ধরনের গাইনি সার্জারি অন্যান্য ধরনের সার্জারির তুলনায় কম আক্রমণাত্মক।


গাইনি সার্জারির ঝুঁকি

সব ধরনের সার্জারির মতো গাইনি সার্জারিরও কিছু ঝুঁকি রয়েছে, যেমন:
• সংক্রমণ
• রক্তক্ষরণ
• অ্যালার্জি
• রক্ত জমাট বাঁধা

কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন?
যদি আপনার নীচের কোনো লক্ষণ থাকে তাহলে অবশ্যই একজন গাইনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন:
• অস্বাভাবিক যোনি রক্তপাত
• পেটে ব্যথা
• পেলভিক অঞ্চলে চাপ
• মূত্রত্যাগে সমস্যা
• যৌন সম্পর্কের সময় ব্যথা

মনে রাখবেন: গাইনি সার্জারির সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করা জরুরি।

লেখক: ডা. ফারজানা হাসীন (মুক্তি)
এমবিবিএস, ডিজিও, এফসিপিএস, এমসিপিএস
সিনিয়র কনসালটেন্ট
গাইনোকোলজি অ্যান্ড অবসটেট্রিক্স
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।