গুইমারায় হিল ভিডিপি সদস্যদের আগাম শিম চাষে সাফল্য

খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার বড়পিলাক গ্রামের হিল ভিডিপি (গ্রাম প্রতিরক্ষা দল) সদস্যরা আগাম জাতের শিম চাষে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। উপজেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষক আল আমিনের উদ্যোগে এবং জেলা কমান্ড্যান্ট আরিফুর রহমানের সার্বিক দিকনির্দেশনায় এই কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়।

প্রশিক্ষক আল আমিনের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, নিবিড় তত্ত্বাবধান ও কারিগরি সহায়তায় ভিডিপি সদস্যরা আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে আগাম শিম চাষ শুরু করেন। সাধারণত শীতকালীন এই ফসল আগেভাগে বাজারে আনতে সক্ষম হওয়ায় তারা ভালো দাম পেয়েছেন। এতে শুধু ঋণ পরিশোধই নয়, বরং তাদের পারিবারিক জীবনে এসেছে আর্থিক স্বচ্ছলতা ও আত্মনির্ভরতা।

উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা গোলাম হারুন, প্রশিক্ষক আল আমিন এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার যৌথ প্রচেষ্টায় ভিডিপি সদস্যরা আধুনিক চাষপদ্ধতি, রোগ দমন ও ফলন বৃদ্ধির কৌশল প্রয়োগ করে উন্নত মানের ফসল উৎপাদনে সফল হয়েছেন।

প্রশিক্ষক আল আমিন বলেন, ভিডিপিদের আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে পতিত জমিতে আগাম সবজি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে রেঞ্জ কমান্ডার, জেলা কমান্ড্যান্ট, ভিডিপি ব্যাংক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে।

ভিডিপি সদস্য বেলাল জানান, আল আমিন স্যারের পরামর্শে ভিডিপি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে শিম চাষ শুরু করি। এখন বছরে তিন থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত আয় হচ্ছে—এই চাষাবাদ আমাদের জীবনে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।

সহকারী প্লাটুন লিডার মহি উদ্দিন বলেন, আমরা সবাই লোন নিয়ে এই চাষ করছি। যদি লোনের পরিমাণটা এক লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়, তাহলে আরও অনেক সদস্য এই কাজে যুক্ত হতে পারবেন।

বর্তমানে গুইমারায় উৎপাদিত আগাম শিম স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায়ও সরবরাহ করা হচ্ছে। মাঠপর্যায়ের তথ্যমতে, গুইমারা উপজেলার প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন ভিডিপি সদস্য এই শিম চাষে লাভবান হয়েছেন।

ভিডিপি সদস্যদের এই সাফল্য প্রমাণ করেছে,সরকারি প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীও অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হতে পারে। গুইমারার এই উদ্যোগ এখন দেশের অন্যান্য অঞ্চলের জন্য অনুকরণীয় মডেল হয়ে উঠছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।