ঘাসফুলের ওয়েবিনার: যুব সমাজই ইতিহাস সৃষ্টি করে

ঘাসফুল আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তারা বলেছেন, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে যুবাদের মূল্যায়ন করে দুষ্প্রাপ্য সম্পদ ও সময়কে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যৎমুখী দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা জরুরী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে শিল্প প্রতিষ্ঠানের যদি একটা যোগযোগ স্থাপন করা যায় তাহলে কর্মমুখী শিক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব। উদ্যোক্তাদের নানা প্রশাসনিক জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। যুবদের সাথে সমাজের এবং ব্যবসার কানেকটিভিটি বাড়াতে হবে। কারণ যুব সমাজই ইতিহাস সৃষ্টি করে।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে ঘাসফুল প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ‘চাকুরী প্রার্থী নয়, উদ্যোক্তা যুব গোষ্ঠীই সমৃদ্ধির চালিকা শক্তি’ শিরোনামে এক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ছিলো; প্রশিক্ষিত যুব, উন্নত দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।

ঘাসফুল চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ও চবি সিনেট সদস্য ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরী’র সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঘাসফুলের সিইও আফতাবুর রহমান জাফরী। প্রফেসর ড. এম. এ. সাত্তার মন্ডলের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি উপস্থাপন করেন সংস্থার সহকারী পরিচালক সাদিয়া রহমান। ওয়েবিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রফেসর ইমেরিটাস ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এম. এ. সাত্তার মন্ডল। প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউসেপ বাংলাদেশ এর চেয়ারপার্সন ও আইসিএবি’র সাবেক সভাপতি পারভীন মাহমুদ এফসিএ, দৈনিক প্রথম আলো যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক মুনির হাসান ও এসএমই ফাউন্ডেশন এর মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খান।

আরো বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ঘাসফুল সাধারণ পরিষদ সদস্য প্রফেসর ড. গোলাম রহমান, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মশিয়ার রহমান, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব আইসিটি এর সিইও শহীদ উদ্দিন আকবর, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান, ইউএনডিপি’র ইয়ুথ কো-অর্ডিনেটর মাহমুদুল হাসান, নওগাঁর যুব উদ্যোক্তা সোহেল রানা, রাসেল বাবু, নারী উদ্যোক্তা চট্টগ্রাম ও’মেন চেম্বার এর মুনাল মাহবুব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো: জোয়াদুল করিম, আউট সোর্সিং তরুণ উদ্যোক্তা মোন্তাসির গণি আইচম, ভোরের আলোর প্রধান সমন্বকারী, শফিকুল ইসলাম খান, সংশপ্তক এর নির্বাহী পরিচালক লিটন চৌধুরী, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রাদিয়া আজিজ চৌধুরী ও প্রকৌশলী সনাতন চক্রবর্তী বিজয়।

বক্তারা আরও বলেন, নারীদের অর্থনীতির মূল জায়গায় আনতে হবে, তাদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। ইনফরমাল সেক্টরে যে সকল যুবরা কাজ করছে তাদেরকে ধীরে ধীরে ফরমাল সেক্টরে নিয়ে আসতে হবে। যুবদের অনেকেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছে কিন্তু প্রশিক্ষণের পরে উদ্যোক্তা হতে তাদের অর্থের সংস্থান করে দিতে হবে। আমাদের দেশে কোভিডকালীন অর্থকষ্টে অনেকেই গ্রামে ফিরে গেছেন এর একটি ইতিবাচক পরিবর্তনও লক্ষ্য করা যায়। গ্রামে ফিরে যাওয়া অনেকেই এখন কৃষিক্ষেত্রে উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। আমাদের সন্তানদের পড়ালেখার পাশাপাশি পরিবার থেকেই জীবনমুখী ধারণা দিতে হবে। বাংলাদেশে ব্যয় সাশ্রয়ী হিসেবে ইকো-টুরিজমে দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে ঘাসফুল চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ও চবি সিনেট সদস্য ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরী বলেন, একটি জাতির সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশ হচ্ছে যুবরাই। এই উপমহাদেশে সুর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামের যুব বিদ্রোহ, তুরস্কের কামাল আতার্তুকের নেতৃত্বে যুগের পরিবর্তন সবকিছুই সৃষ্টি হয়েছে যুবাদের মাধ্যমে। যুগে যুগে যুবারাই ইতিহাস সৃষ্টি করেছে আর প্রবীণেরা সেই ইতিহাস লিখে গেছেন। আগামী বাংলাদেশে আমরা যেই উদ্যোগ চাই তা হল উদ্যোক্তা যুবগোষ্ঠী যেন সমৃদ্ধির চালিকা শক্তি হয়। ওয়েবিনারে ১০টি সুপারিশমালা গৃহীত হয়।

ওয়েবিনারে আরো সংযুক্ত ছিলেন ঘাসফুল নির্বাহী পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কবিতা বড়ুয়া, ঘাসফুল সাধারণ পরিষদ সদস্য ডা. সেলিমা হক, জাহানারা বেগম ও শাহানা মুহিত, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, উদ্যোক্তা, যুব ও উন্নয়ন সংস্থা প্রতিনিধি, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং ছাত্র ছাত্রীবৃন্দ। ওয়েবিনারটি ঘাসফুল ফেইজবুক থেকে লাইভ সম্প্রচার করা হয়।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।