ঘূর্ণিঝড় মোখা—চোখ সৃষ্টি হয়েছে, ধেয়ে আসছে সেন্টমার্টিনের দিকে

ঘূর্ণিঝড় মোখা অনেক দ্রুত উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং রাত ১২ টা থেকে সকাল ১০ টার মধ্যেই সেন্টমার্টিন দ্বীপে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ। উপকূল অতিক্রমের সময় মোখা ঘন্টায় ১৯০ থেকে ২১০ কিলোমিটার গতিবেগে আঘাত করতে পারে বলেও তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

শনিবার (১৩ মে) রাত ৮টায় জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত রিয়েল টাইম চিত্র ও আমেরিকার নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জয়েন টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার হতে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে এই পূর্বাভাস তৈরি করেন জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল।
রাত ১২ টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি সর্বোচ্চ গতি অর্জন করতে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে স্পষ্টত চোখ সৃষ্টি হয়েছে ও প্রচণ্ড ঘূর্ণন সৃষ্টি হয়েছে।

শনিবার রাত ৯টায় দেওয়া ১৬ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়ার অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

টেকনাফ—উখিয়া প্রস্তুতি
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, ৪৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে আমরা প্রায় আট হাজার মানুষকে এনেছি। এছাড়া উপজেলার সব হোটেল মোটেলকে নির্দেশনা দেয়া আছে যে কোনো পরিস্থিতিতে গেস্ট হাউজগুলো আমরা ব্যবহার করবো।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, সেন্টমার্টিনে ৩৭টিসহ টেকনাফ উপজেলায় ১০১টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। সেন্টমার্টিনের আড়াই হাজার বাসিন্দাকে আমরা টেকনাফে নিয়ে এসেছি। যারা সেন্টমার্টিন রয়ে গেছে তাদের জন্য ৩৭টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, শনিবার (১৩ মে) বিকেল ৫টা পর্যন্ত আমরা প্রায় পাঁচ হাজার মানুষেকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছি। প্রশাসন, উন্নয়ন সংস্থাসহ আমরা এক যোগে কাজ করছি।

দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম চৌধুরী বলেন, উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষজনকে সরিয়ে আনা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন, রেডক্রিসেন্টসহ সবাই সতর্ক আছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমেদ বলেন, আড়াই হাজার মানুষকে সেন্টমার্টিন থেকে নিরাপদে সরানো হয়েছে। দ্বীপের স্থায়ী বাসিন্দাসহ ব্যবসায়িক কাজে দ্বীপে অবস্থানরত এখনো হাজার দশেক মানুষ আছেন। তাদের নিরাপদ রাখতে উপজেলা প্রশাসন, রেডক্রিসেন্টসহ সবাই এক যোগে কাজ করছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।