চট্টগ্রামকে দেশের প্রথম স্মার্ট জেলা করতে চান ডিসি ফখরুজ্জামান

বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সেই স্মার্ট বাংলাদেশের প্রথম জেলা হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তোলার ঘোষণা দিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। তিনি বলেন, নারী জাতির ক্ষমতায়ন ছাড়া দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন সফল নারী। নারী সমাজের উন্নয়নের জন্য বিশ্বের কাছে তিনি এখন রোল মডেল। দেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে চট্টগ্রামের গুরুত্ব অপরিসীম। চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের প্রথম স্মাট জেলা করতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বো।

বৃধবার (৮ মার্চ) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম শিশু একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আলোচনা সভা ও নারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে-‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, জেন্ডার বৈষম্য নিরসন, শেখ হাসিনার বারতা, নারী-পুরুষ সমতা’। আলোচনা সভার পূর্বে শিশু একাডেমির মাঠে নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

চট্টগ্রামকে স্মার্ট জেলা করতে জেলা প্রশাসক ১৫ উপজেলা থেকে ৩টি করে আইডিয়া বা ধারণা ও মহানগর থেকে ৫টিসহ মোট ৫০টি আইডিয়া নেওয়ার কথাও জানান। তিনি বলেন, যাদের সঠিক ধারণা ও পরিকল্পনায় স্মার্ট জেলা হবে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে।

আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, আমাদের মেয়েরা ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় পুরো সমাজকে নাড়া দিয়েছে। চট্টগ্রামে মেয়েদের জন্য আলাদা কোন খেলার মাঠ নেই। তাদেরকে মাঠ দিতে না পারলে খেলবে কোথায়? ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরকে খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে উদ্বুদ্ধ করতে নির্ধারিত স্থানে খেলার মাঠ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার ১৯১টি ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতে খেলার মাঠ করার পাশাপাশি মাঠের পাশে বিনোদনের আলাদা মঞ্চ তৈরী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এদেশে নারী-পুরুষের সমতা আছে বলেই দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে ও সমতার ভিত্তিতে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা গেলে জাতীয় অগ্রগতি আরও ত্বরান্বিত হবে। নারীরা নিজেদেরকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে পারলে সহিংসতা ও নির্যাতন থেকে রক্ষা পাবে।

ডিসি ফখরুজ্জামান বলেন, সমাজ ও দেশের উন্নয়নে নারীদের অবদান অনেক বেশি। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামেও নারীদের অনেক আত্মত্যাগ রয়েছে। নারীরা কখনো পুরুষদের প্রতিদ্ব›িদ্ব নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন সফল নারী। দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নারীরা কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে এখন সব পেশায় সর্বক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হচ্ছে। দেশে এমন কোন পেশা নেই যেখানে মেয়েরা কাজ করতে পারবে না। বর্তমান সরকার সব জায়গায় নারী-পুরুষের সমান সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি করে রেখেছেন। মনমানসিকতার পরিবর্তন ঘটিয়ে নিজের দক্ষতা ও জ্ঞান দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হলে নারীর প্রতি সহিংসতা, নারী নির্যাতন, এসিড নিক্ষেপ, বাল্যবিবাহ ও ইভটিজিং রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মু. মাহমুদ উল্লাহ মারূফের সভাপতিত্বে ও নারী কর্মী জান্নাতুল ফেরদাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত নারী দিবসের আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাধবী বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিশু একাডেমির জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মোঃ মোছলেহ্ উদ্দিন, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা-ইলমা’র প্রধান নির্বাহী নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের এরিয়া ম্যানেজার জনি রোজারিও। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ইপসা’র আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ফারহানা ইদ্রিছ। বিভিন্ন বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী ও নারী উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।