চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বিদেশ ফেরত দুই প্রবাসীর টাকার ঝামেলা মেটাতে গিয়ে মামলার আসামি হলেন ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ ৯ জন। মারধর ও আটকে রেখে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ এনে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং তিনজনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে আদালতে মামলা করেছেন ফোরকান নামের এক প্রবাসী।
ওই মামলা আসামী করা হয়েছে আনোয়ারা বরুমছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল ইসলাম চৌধুরী ও আবদুল মালেক নামে একই ইউনিয়নের ইউপি সদস্যকে।
তবে তাঁরা দুইজনই বলছেন, টাকার পাওয়ার স্বীকারোক্তি ও জামিনদার হিসেবে ৬টি খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দেন মামলার বাদী বিদেশ ফেরত প্রবাসী ফোরকান। ভুক্তভোগী মোহাম্মদ ফোরকান (৪০) উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের কৈখাইন এলাকার মৃত আলী আকবরের পুত্র।
গত রোববার (২৩ জুন) চট্টগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করা মামলার অপর আসামিরা হলেন, বরুমছড়া এলাকার মো. নাছির (৫০), মো. মিজান (৩০), মো. খোকন (৩৫), ও মো. রুবেল (৩৮)।
মামলা সূত্র জানায়, গত শুক্রবার (২১ জুন) রাতে উপজেলার বরুমছড়া ইউনিয়নের সদর দিঘীর পাড়ে বিদেশের ড্র সমিতির টাকার কথা বলে প্রবাসী মো. ফোরকানকে ডেকে নিয়ে আটকে রেখে মারধার করে অভিযুক্ত মো. নাছিরসহ তার লোকজন। এরপর জোরপূর্বক ১০০ টাকা মূল্যমানের ৬টি খালি স্ট্যাম্প এবং চেয়ারম্যানের খালি প্যাডে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেন।
প্রবাসী মো. ফোরকান অভিযোগ করে বলেন, দুবাইতে থাকাকালীন অভিযুক্ত নাছিরসহ আমরা কয়েকজনে মিলে একটি ড্র সমিতি করেছিলাম। নাছির ড্র পেয়ে কিস্তির ৮ লাখ টাকা পরিশেষ না করে দেশে চলে আসে। আমি দেশে এসে পাওনা টাকার জন্য যোগাযোগ করলে গত শুক্রবার রাতে পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে বরুমছড়া এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ মিলে বরুমছড়ার সদরদিঘী পাড় এলাকায় আটকে মারধর করে উল্টো আমার কাছ থেকে টাকার পাওয়ার স্বীকারোক্তি নিয়ে ৬টি খালি স্ট্যাম্প ও চেয়ারম্যান প্যাডে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেন। পরে সেখান থেকে রক্ষা পেয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মো. নাছির বলেন, দুবাইয়ে সবজি মার্কেটে বিদেশীসহ আমাদের একটি মাসিক ড্র সমিতির টাকা নিয়ে দেশে চলে আসে ফোরকান। এ টাকা গুলোরজন্য একাধিক বৈঠকও হয়েছে। সবশেষ বৈঠকে চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও সমাজের মান্যগণ্য ব্যক্তিদের উপস্থিততে সে নিজে খালি স্ট্যাম্প ও স্বীকারোক্তি দেন।
বরুমছড়া ইউনিয়নেযর চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল ইসলাম বলেন, তাদের মধ্যে বিদেশে টাকা দেনা পাওনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। এটা নিয়ে উভয়ই বৈঠকে আসে। বৈঠকে প্রবাসী ফোরকান নিজে টাকার পাওয়ার স্বীকারোক্তি দেন এবং জামিনদার হিসেবে ৬টি খালি স্ট্যাম্পও দেন। কেউ তাকে জোরপূর্বক স্ট্যাম্প ও স্বাক্ষর নেয়নি।
বাদীর আইনজীবী এম. আসাদুল আলম সালেহ বলেন, গত রোববার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল নাহারের আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়। আদালত এটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।