চট্টগ্রামে নয়, বাবুল-মিতুর সন্তানদের জবানবন্দি নিতে পুলিশই যাবে মাগুরা

সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তাদের দুই সন্তানের জবানবন্দি গ্রহণের জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তাতে যেতে হবে মাগুরায়। মাগুরা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে শিশুদের অভিভাবক (দাদা) ও সমাজসেবা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করতে হবে। মানতে হবে শিশু আইন।

বুধবার (৮ জুন) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি সাহেদ নুর-উদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী।

জানতে চাইলে বাবুল আক্তারের আইনজীবী ও চট্টগ্রাম বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, ‘তদন্ত কর্মকর্তারা মাগুরায় যাওয়ার তিনদিন আগে শিশুদের অবিভাবককে (দাদা) জানাতে হবে। শিশুদের জবানবন্দি রেকর্ড করার সময় জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, একজন নারী পুলিশ সদস্য ও শিশুদের দাদা উপস্থিত থাকবেন। শিশু আইনের বিধানাবলী অনুসরণ করে শিশুদের জবানবন্দি গ্রহণ হবে। তবে নির্ধারিত দিনে শিশুদের হাজির করতে কোনো গড়িমসি এবং কোনো টালবাহানা চলবে না বলেও আদালত উল্লেখ করেছেন।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পরিদর্শক আবু জাফর মো. ওমর ফারুক মিতু-বাবুল দম্পত্তির সন্তান আক্তার মাহমুদ মাহী ও তাবাচ্ছুমের জবানবন্দি গ্রহণের অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। গত ১৬ মার্চ শিশু আইন মেনে সতর্কতার সঙ্গে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত।

আদালতের এ আদেশের পরে পিবিআই শিশু দুটিকে তাদের অফিসে হাজির করতে নোটিশ দেয়, যা তারা শিশু আইন অনুযায়ী করতে পারে না পুলিশ। এরপর দুই শিশুর দাদা ও চাচার পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়ের করেন আইনজীবী শিশির মনির। ওই রিটের শুনানি শেষে আদালত শিশু আইন মেনে পিবিআইকে মাগুরায় গিয়ে শিশুদের জবানবন্দি গ্রহণের নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, এই মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমাও মাহি-তাবাচ্ছুমকে পিবিআই কার্যালয়ে এনে জবানবন্দি গ্রহণ করতে চেয়ছিলেন। তখন আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩০ জুন চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস আরা শিশু আইন অনুসরণ করে মাগুরা গিয়ে তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করতে আদেশ দিয়েছিলেন।

এরই মধ্যে এই মামলায় অনেক নাটকীয় পরিবর্তন আসে। বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে তার শ্বশুরকে দিয়ে মামলা দায়ের করানো হয়। আদালত আবার সেই মামলা খারিজ করে দিয়ে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলা চলমান রাখে।

সন্তোষকে পিবিআই থেকে সিএমপিতে পদায়ন করা হলে মামলার তদন্তভার যায় কোতোয়ালী থানার সাবেক ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিমের কাঁধে। সেলিমের পদোন্নতির পর এই মামলার তদন্তভার পান পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর মো. ওমর ফারুক। তদন্তের স্বার্থে তিনি দুই শিশুর জবানবন্দি গ্রহণের এই পর্যায়ে আছেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।