করোনার প্রকোপ কাটিয়ে দীর্ঘ দুই বছর পর আবারও বাংলা বর্ষবরণের উচ্ছ্বাসে মেতেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। পুরানো সব জঞ্জালকে ধুয়ে মুছে ফেলে নতুন বছরে ভালো কিছু করার প্রত্যয়ে বরণ করা হচ্ছে বাংলা নতুন বছরকে।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকেই নগরীর প্রধান উৎসব কেন্দ্র ডিসি হিল থেকে শুরু করে সিআরবি শিরীষতলা, চট্টগ্রাম চারুকলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন এলাকায় নানা আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে বর্ষবরণ।
সকাল থেকেই অনুষ্ঠানস্থলে লোকজনের প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে চট্টগ্রামে বর্ষবরণের কোনও অনুষ্ঠান হয়নি। তাই এবার বর্ষবরণের আয়োজনে সবার ছিল স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতি, যেন জড়তা কাটিয়ে জেগে ওঠার চেষ্টা।
ভোর ৬টায় ডিসি হিলে নজরুল স্কয়ারে শুরু হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের আয়োজনে এবারের প্রতিপাদ্য ‘পহেলা বৈশাখ বাঙালির উৎসব, সবার যোগে জয়যুক্ত হোক’।
নগরীর সিআরবির শিরীষতলায় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় সাংস্কৃতি পরিবেশনা। এরপর সংগীত ভবন, সুরাঙ্গন বিদ্যাপীঠ, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, অদিতি সংগীত নিকেতন, সৃজামি, রাগেশ্রীসহ বিভিন্ন সংগঠন সাংস্কৃতিক সংগঠন পরিবেশনায় অংশ নেয়।
চবি চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে সকাল ১০টায় বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। সংক্ষিপ্ত আয়োজনে এই শোভাযাত্রাটি নগরীর কাজীর দেউড়ি মোড় ঘুরে আবার চারুকলা ইনস্টিটিউটে গিয়ে শেষ হয়। চারুকলা অনুষদের এবারের আয়োজন চিত্রশিল্পী রশিদ চৌধুরীকে উৎসর্গ করা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে চিত্রশিল্পী রশিদ চৌধুরীর স্লোগান ‘শিল্পের প্রয়োজন; বিবেকের জন্য, জীবনের জন্য’কে প্রতিপাদ্য করা হয়েছে।
সকাল ৯টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। জেলা প্রশাসনের উদ্যাগে আয়োজিত এ শোভাযাত্রা এমএম আলী সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়। এছাড়া বর্ষবরণ উপলক্ষে সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমির মুক্ত মঞ্চে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়।
এবার চট্টগ্রামের পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান দুপুর ২টার মধ্যে শেষ করা হয়। বর্ষবরণের জন্য সকাল থেকে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ভিড় ছিল। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। এছাড়া রোজার মধ্যে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হওয়ায় উৎসবস্থলগুলোতে খাবার দাবারের কোন আয়োজন ছিল না। আর রোজা ও রোদের কারণেও রোজাদারদের অনেকেই এই বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে যোগ দেননি।
এমএফ
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।