চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করলো লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতাল

চক্ষু চিকিৎসা সেবায় আধুনিকায়ন ও দক্ষ চিকিৎসক গড়ার লক্ষ্যে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করেছে লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতাল। ৬০ বছর ধরে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসা লায়ন্স দাতব্য চক্ষু হাসপাতালটিকেই রূপান্তর করা হলো লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে। চলতি বছর থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এই ইনস্টিটিউটে ছাত্রছাত্রী ভর্তি শুরু হচ্ছে বলে জানা গেছে।

শনিবার (৮ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জাকির হোসেন রোডস্থ লায়ন্স কমপ্লেক্সে লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি।

তিনি বলেন, স্বল্পমূল্যে ও বিনামূল্যে চক্ষু সেবা দিয়ে আসা লায়ন্স চক্ষু হাসপাতাল যেভাবে দেশের চিকিৎসা খাতে বিরাট অবদান রেখেছে তেমনি চক্ষু চিকিৎসায় নতুন মাইলফলক স্থাপন করবে লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম তথা সারাদেশে দক্ষ জনবল তৈরী ও মানসম্মত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, লায়ন্সরা সারা বিশ্বেই অন্ধত্ব নিবারণে কাজ করে। আমাদের দেশেও তারা এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছেন। ১শ শয্যার হাসপাতালে ও বহিঃবিভাগে একরকম বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসার দিয়ে আসার পর তারা এখন চক্ষু চিকিৎসায় প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবল তৈরীতেও সমান ভূমিকা রাখতে পারবে।

চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করলো লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতাল 1

তিনি বলেন, এ ইনস্টিটিউট নাম মাত্র ফি’তে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে তাদেরকে আগামীর যোগ্য চক্ষু চিকিৎসক হিসেবে গড়ে তুলবে, যা এ সেক্টরে সংকট লাঘবে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান লায়ন নাসিরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত লায়ন্স আই হসপিটালকে এবার ইনস্টিটিউটে রূপান্তর করা হচ্ছে। চক্ষু বিষয়ক উচ্চতর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে দক্ষ জনবল গঠনের লক্ষ্যে ভবিষ্যতে উচ্চতর কোর্স পরিচালনার জন্যই এ উদ্যোগ।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অধিভুক্তির জন্য ডিপ্লোমা ইন অফথ্যালমোলজি কোর্স অধিভুক্তির জন্য আবেদন করেছে চট্টগ্রাম লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটাল কর্তৃপক্ষ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ জুন বিএসএমএমইউর একটি পরিদর্শন টিম পরিদর্শন করেন।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে চক্ষু বিষয়ক উচ্চতর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পরিচালনার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অনুমোদন পেয়েছে লায়ন্স আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটাল। গত জানুয়ারি থেকে এমএলওপি এবং পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট সাবস্পেশালিটি ফেলোশিপ কোর্সের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

চট্টগ্রাম লায়ন্স ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন জেলা গভর্নর লায়ন নাসির উদ্দিন চৌধুরী সভাপতিত্বে ও ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারী লায়ন ডা. দেবাশীষ দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত উদ্বোধনী আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১১ আসনের এমপি এম.এ.লতিফ।

এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রাক্তন জেলা গভর্নর লায়ন ইঞ্জিনিয়ার এম.আই.খান, লায়ন এম এ মালেক, লায়ন নাজমুল হক চৌধুরী, লায়ন রূপম কিশোর বড়ূয়া, লায়ন এসএম সামসুদ্দিন, লায়ন সিরাজুল হক আনচারী, লায়ন কামরুন মালেক, লায়ন আল সাদাত দোভাষ, লায়ন সামসুদ্দিন আহমেদ সিদ্দিকী, লায়ন কহিনুর কামাল প্রমূখ।

প্রসঙ্গত, আই ইনস্টিটিউট পরিচালনার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও দক্ষ জনবল সমৃদ্ধ করে সাবস্পেশালিটি সেবা কার্যক্রম, মিডলেভেল, পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট, সাবস্পেশালিটিসহ বিভিন্ন কোর্স চালু করতে ইনস্টিটিউট প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।