বর্ণিল আয়োজনে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগ। বেলুন উড়িয়ে এবং পায়রা অবমুক্ত করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সাবেক নেতৃবৃন্দদের সম্মাননা স্মারক প্রদান ও আলোচনা সভার মাধ্যমে বর্ণাঢ্য এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (১১ নভেম্বর) নগরীর কাজীর কাজির দেউরিস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভারও আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মাহাবুবুল হক সুমন, সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
সরজমিনে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দুপুরের পর থেকে সভাস্থলে জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। দলে দলে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সবাই জড়ো হতে থাকেন ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে। এ সময় সবাই স্লোগানে স্লোগানে মাতিয়ে তুলেন চারদিক। পরে বিকেলে আলোচনা সভা শুরু হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মনি এই যুব সমাজকে সংগঠিত করতেই গড়ে তোলেন যুবলীগ। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সংগঠনটি একটি শক্তিশালী যুব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। প্রথম চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন শেখ মনি নিজেই। স্বাধীনতার পর যুবলীগ জিয়া-এরশাদ-খালেদার স্বৈরাচারী শাসনামলেও অকুতোভয়ে সংগ্রাম করেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন এই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ও রক্ষায় সংগঠনটির অবদান অনস্বীকার্য।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা আ জ ম নাছির উদ্দীন যুবলীগের নেতা-কর্মীদের জাতির পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আদর্শবিহীন রাজনীতি টিকে থাকতে পারে না। যুবলীগের নেতা-কর্মীদের বলবো জাতির পিতার আদর্শ যদি কেউ বুকে ধারণ করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে রাজনীতি করে তাহলে সেই রাজনীতিতে টিকে থাকে। কিন্তু যে রাজনীতি করতে গিয়ে লোভের বসবর্তী হয়, অর্থ-সম্পদ যাদের কাছে বড় হয়ে যায়, তারা কিন্তু বেশিদিন টিকতে পারে না, এটা বাস্তবতা।
তিনি আরও বলেন, সংগঠনকে শক্তিশালী করে আদর্শভিত্তিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সবসময় মনে রাখতে হবে, আমাদের রাজনীতি যাতে দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য হয়, কারণ সেটিই সঠিক রাজনীতি।
সভাপতির বক্তব্যে মাহাবুবুল হক সুমন বলেন, যুবসমাজ ধর্মান্ধ রাজনীতির বিরুদ্ধে কাজ করছে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণে শেখ হাসিনার হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করতে বলেছিলেন সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবায়ন মূল লক্ষ্য। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে আগামীর যুবলীগ আর এভাবে এগিয়ে যাবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার বলেন, প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মনির জ্যেষ্ঠপুত্র, পরিচ্ছন্ন ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত শেখ ফজলে শামস পরশকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মাইনুল হোসেন খান নিখিল। দায়িত্ব গ্রহণের পর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাকালীন মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে গত প্রায় দুই বছরে মানবিক রাজনীতিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। শেখ পরশের নেতৃত্বে বিতর্কের কালিমা মুছে প্রতিষ্ঠাকালীন আদর্শে ফিরেছে যুবলীগ। অন্যের স্বার্থ ছিনিয়ে নেয়া থেকে বেরিয়ে মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে এসেছে যুবলীগ। সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করাকেই এখন আদর্শ হিসেবে দেখছেন যুবলীগের নেতাকর্মী। সেখানে একজন আদর্শ শিক্ষকের ভূমিকায় রয়েছেন শেখ পরশ।
এতে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন—বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক সৈয়দ মাহমুদুল হক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মসিউর রহমান চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ, ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু। সভায় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সহ সভাপতি নুরুল আনোয়ার, বেলায়েত হোসেন বেলাল, আঞ্জুমান আরা, হেলাল উদ্দীন আহমেদ, দেবাশীষ পাল দেবু, ওয়াসিম উদ্দীন চৌধুরী, সাখাওয়াত হোসেন সাকু, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ, ইসতিয়াক আহমেদ সাদিত, সাইফুদ্দিন।
আরও উপস্থিত ছিলেন—চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সনত বড়ুয়া, দিদার-উর রহমান তুষার, গিয়াস উদ্দীন তালুকদার, আবু মো. মহিউদ্দীন, এ জে এম মহিউদ্দিন রনি, সুমন চৌধুরী, মনোয়ারুল আলম চৌধুরী নোবেল, অর্থ সম্পাদক মান্না বিশ্বাস, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান রুমেল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক হেলাল উদ্দীন আহমদ, তথ্য ও যোগাযোগ সম্পাদক প্রফেসর রেজাউল করিম, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক নঈম উদ্দীন খান, ক্রীড়া সম্পাদক রাজীব হাসান রাজন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মো. আলমগীর টিপু, উপ স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম মান্নান, উপ ক্রীড়া সম্পাদক শাহাজাহান আহমেদ সামী, সহ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ, ইব্রাহিম খলিল নিপু, সদস্য মো. ওয়াসিম এবং মোক্তার আহমদ আরিফ।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের আওতাধীন ৪৪টি ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক-যুগ্ম আহ্বায়কগণ ও মহানগর যুবলীগের সাবেক সদস্যবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।