জাতীয় ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালে তিন দিনের ডায়াবেটিক মেলা শুরু হয়েছে। এটি আয়োজক প্রতিষ্ঠানের ১২তম মেলা।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) শুরু হওয়া যুগপূর্তি ‘ডায়াবেটিক মেলা’ চলবে আগামী ১ মার্চ পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে ফিতা ও কেক কেটে যুগপূর্তি মেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম. রেজাউল করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাউদ্দিন মোঃ রেজা। শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরী ।
মেলার উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি চসিক মেয়র এম. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন—ডায়াবেটিক মেলা ডায়াবেটিক রোগীদের সচেতন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কারণ এই মেলার মাধ্যমে ডায়াবেটিক রোগীরা বিভিন্ন চিকিৎসা সেবা ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অবগত হতে পারবে এবং অত্র হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদ অত্যন্ত আন্তরিকতার সহিত মানবতার কাজের মাধ্যমে এই সমাজকে আলোকিত করছেন। এই হাসপাতাল আর্তমানবতার সেবায় ধনী, গরীব সকলকে সমভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে এই হাসপাতালের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, স্বাস্থ্যখাতে বর্তমান সরকারের সাফল্য আজ বিশ^ব্যাপী স্বীকৃতি লাভ করেছে। স্বাস্থ্যসেবার অগ্রগতির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই এর তদারকি করছেন এবং সাধারণ মানুষ যাতে স্বাস্থ্যখাত হতে প্রকৃত সেবা পায় তজ্জন্য তিনি গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকের চিকিৎসা সেবার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এর আগে স্বাগত বক্তব্যে অধ্যাপক জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন—কোনো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য নয়, শুধুমাত্র সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এই মেলার আয়োজন। ২০১১ সালে ডায়াবেটিক মেলার যাত্রালগ্ন থেকে সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা ও প্রচারণার মাধ্যমে প্রচুর সাড়ায় অনুপ্রাণিত হয়ে হাঁটি হাঁটি পা পা করে ডায়াবেটিক মেলা ১২ বছর অর্থাৎ এক যুগ পূর্ণ করেছে। এই মেলাকে আরো বৃহদাকারে করার জন্য সরকারসহ সকলের সহযোগীতা কামনা করছি। ডায়াবেটিক হাসপাতাল যেহেতু জেনারেল হাসপাতাল সেহেতু এখানে ডায়াবেটিক, নন-ডায়াবেটিক রোগীরা স্বল্প খরচে সকল চিকিৎসা সেবা নিতে পারেন এবং এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মানকে আরো আধুনিকায়ন ও উন্নত করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
বিশেষ অতিথির বক্ত্যবে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাকের ব্যুরো প্রধান সালাউদ্দিন মোঃ রেজা বলেন—ডায়াবেটিক হাসপাতালে অত্যন্ত কম মূল্যে সব ধরণের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সবরকমের সুযোগ সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন। যদি সকলে মিলে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন তাহলে অত্র হাসপাতালে একটি মেডিকেল কলেজ করা সম্ভব। যদি মেডিকেল কলেজ হয়, তাহলে এখানকার চিকিৎসকরা প্রকৃত সেবা দিতে পারবেন এবং এতদাঞ্চলে চিকিৎসা সেবার পরিধি বৃদ্ধি পাবে।
আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নূরুল মোস্তফা টিনু, কাউন্সিলর মোঃ ইলিয়াস, ডায়াবেটিক সমিতির সহ-সভাপতি এস এম শওকত হোসেন, মিসেস আবিদা মোস্তফা, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ শাহনেওয়াজ, কোষাধ্যক্ষ এস.এম জাফর, নির্বাহী সদস্য প্রিন্সিপাল লায়ন মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, মোঃ শহীদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, হাসপাতাল ডাইরেক্টর ডাঃ নওশাদ আজগার চৌধুরী এবং আদর্শ সচেতন ডায়াবেটিক রোগী শেখ মোঃ মহিউদ্দিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ৫ জন আদর্শ সচেতন ডায়াবেটিস রোগীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। আগামীকাল মেলার ২য় দিন সকাল ৯টায় ডায়াবেটিক সেমিনার ও হেলথ ক্যাম্প মেডিসিন, গাইনী ও প্রসূতি এবং ১ মার্চ সমাপনী দিন সকাল ৮টায় হেলথ ক্যাম্প চর্ম ও যৌন রোগ ও বিকাল ৩টায় চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা, সচেতনমূলক কুইজ প্রতিযোগিতা, সাংষ্কৃতিক ও পুরষ্কার বিতরণী এবং সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে ।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।