চবিতে ভুতুড়ে তদন্ত কমিটির ভুতুড়ে সভা, একজনের পদত্যাগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চাকরি দেয়ার কথা বলে মানিক চন্দ্র দাস নামে এক কর্মচারির অর্থ লেনদের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রথম সভা আহ্বান করা হয়েছে প্রায় এক বছরের মাথায়। বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) এই কমিটির প্রথম সভা বসার কথা থাকলেও কমিটি এক সদস্য সাবেক সহকারী প্রক্টর ও চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এসএম জিয়াউল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া অন্যান্য সদস্যদের ব্যস্ততার কারণে এ সভা পিছিয়ে আগামী সোমবার (৩১ জুলাই) নির্ধারণ করা হয়েছে।

এদিকে খোঁজ নিতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে রহস্যজনক তথ্য। জানা গেছে, মানিক চন্দ্র দাসের অর্থ লেনদের ঘটনায় গত বছরের ৬ আগস্ট চার সদস্য বিশিষ্ট একটি গঠন করা হয়। এতে আহ্বায়ক ছিলেন চবির শাহ আমানত হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক নির্মল কুমার সাহা। এছাড়া সদস্য সচিব হিসেবে ছিলেন গোপনীয় শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার সৈয়দ ফজলুল করিম।

অপর দুই সদস্য ছিলেন- সহকারী প্রক্টর মো. আহসানুল কবীর পলাশ এবং কেন্দ্রীয় স্টোর শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার রাশেদুল হায়দার জাবেদ। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বাদি হয়ে হাটহাজারী থানায় একটি মামলাও করেন।

এর পর এ বছরের ১৫ জানুয়ারি তারিখে একই ঘটনায় আবারও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় যেটির ব্যাপারে কিছুই জানতেন না বলে জানিয়েছেন খোদ তদন্ত কমিটির সদস্য এসএম জিয়াউল ইসলাম। এ বিষয়ে পদত্যাগকারী এসএম জিয়াউল ইসলাম বলেন, এই তদন্ত কমিটি কখন হয়েছে, কেন হয়েছে তা আমি কিছুই জানি না। হুট করে আমাকে চিঠি দিয়ে সভায় ডাকা হয়েছে। আমার কাছে সবকিছু অগোছালো এলোমেলো মনে হয়েছে তাই আমি ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছি।

অপরদিকে জানুয়ারিতে তদন্ত কমিটি হলেও তার ব্যাপারে মার্চ-এপ্রিল মাসে এসে জানতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন এ কমিটির সদস্য সচিব অফিসার সেলের উপ-পরিচালক মো. রাশেদ বিন আমিন চৌধুরী। এছাড়া ৬ মাস পর আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) তদন্ত কমিটির সভা আহ্বান করলেও কী বিষয়ে কমিটিটি গঠন করা হয়েছিল সেটিও জানেন না তিনি।

একটি তদন্ত কমিটি থাকার পরেও ২য় তদন্ত কমিটি কেন গঠন করা হল? এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদ বিন আমিন চৌধুরী বলেন, আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাসহ আরও অনেক কাজে আমি ব্যস্ত ছিলাম। তাই আমি এ তদন্ত কমিটি নিয়ে স্টাডি করার সময় পাইনি। আমি এখন কিছু ব্যক্তিগত কাজে রাঙামাটি এসেছি। তাই এ কমিটির বিষয় কী ছিল তা আমি এখন বলতে পারব না।

প্রথম সভা আহ্বান করতে এত সময় কেন নেয়া হয়েছে তা জানতে চাইলেও একইভাবে ব্যস্ততার অজুহাত দেন তিনি।

এছড়া, তদন্ত কমিটির বিষয়ে জানেন না বর্তমান রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নূর আহমদও। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তখন রেজিস্ট্রার ছিলাম না। আমি এ ব্যাপারে স্টাডি না করে কোনোকিছুই বলতে পারব না।

প্রসঙ্গত, গত বছর আগস্ট মাসের শুরুর দিকে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে তিন চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠে রেজিস্ট্রার অফিসের নিম্নমান সহকারী মানিক চন্দ্র দাশের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার বেশ কয়েকটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর পরেই মূলত বিষয়টি সামনে আসে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।