চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভাঙচুরের মামলা থেকে পদার্থবিদ্যা বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম শাওনের নাম প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে উক্ত বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে মামলার আসামী পদার্থবিদ্যা বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম (শাওন) বলেন, সেইদিন আমি যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছিলাম কোন ধরনের সহিংসতার মধ্যে ছিলাম না। কিছু কুচক্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ভাঙচুর করে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে ভাঙচুর বন্ধ করতে গিয়ে মামলার আসামী হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র ও ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় ঐদিন ভাঙচুর থামানোর কাজে সক্রিয় ছিলাম।
দুইজন সহকারী প্রক্টর এই ঘটনার সাক্ষী। তারপরও আমার নামে মামলা হয়েছে। অনতিবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সেই সাথে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করা হোক।
কোনোরূপ সঠিক তদন্ত ছাড়া মিথ্যা মামলা দিয়ে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করায় প্রশাসনের সুস্পষ্ট বক্তব্য আশা করছি।
একই বিভাগের ১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আশরাফুল বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া পূরণ করার জন্য শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করি আমরা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলোর প্রতি কর্ণপাত না করে উল্টো সম্পূর্ণ অন্যায় ভাবে কোন তদন্ত না করে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। সেইসাথে সামাজিকভাবে হেই প্রতিপন্ন করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ১৯ সালে আমাদের নতুন একটি ট্রেন দিতে চাওয়ার নাম করে ডেমো ট্রেন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আজ পর্যন্ত সেই ট্রেন আমরা পাইনি। ফলে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আমরা চাই অনতিবিলম্বে আমাদের পরিবহন সমস্যা সমাধান করা হোক।
পদার্থবিদ্যা বিভাগের ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আলিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মামলা দিয়েছে। তারা যদি সিসি ক্যামেরা চেক করে সঠিক তদন্ত করার মাধ্যমে মামলা দিত তাহলে আমরা মাথা পেতে নিতাম। কিন্তু সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কোন তদন্ত ছাড়াই মামলা দেওয়া হয়েছে। এই মামলা প্রত্যাহারের জন্য স্টেপ বাই স্টেপ আমরা আগাচ্ছি। মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী থামব না।
প্রসঙ্গত, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে শাটল ট্রেনের ছাদে যাতায়াত করতে গিয়ে গাছের আঘাতে অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হন। এর পরপরেই শিক্ষার্থীরা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে জড়ো হয়ে আন্দোলন শুরু করেন। এর মধ্যে আহত একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে জিরো পয়েন্টে অবস্থিত পুলিশ বক্স, উপাচার্যের বাসভবন, পরিবহন দপ্তরে ও শিক্ষক ক্লাবে ব্যপক ভাঙচুর চালায়৷ এ ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।