চবিতে সাংবাদিকের ওপর হামলা, মামলা করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

চট্টগ্রাম বিশ্বিবদ্যালয়(চবি) সাংবাদিক সমিতির সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী দৌস্ত মোহাম্মদের ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।

মঙ্গলবার (২০ জুন) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সাংবাদিকদের তোপের মুখে এ কথা বলেন উপাচার্য।

ড. শিরীণ আখতার বলেন, আমি এই হামলার কথা শুনেছি। এই ঘটনা সত্যি নিন্দনীয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসা সর্বোচ্চ সহায়তা করবো।

এই সময় উপাচার্য ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে বলে জানান। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বা নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবেন।

এ সময সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই ঘটনার বিচার নিশ্চিতের দাবি জানান।

এর আগে, সোমবার (১৯ জুন) চায়ের দোকানে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ভোক্তভোগী ওই সাংবাদিকের মুখে গরম চা ঢেলে দেন ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ।

এসময় সাংবাদিক পরিচয় দিলে উল্টো বেধড়ক পেটে লাথি মারতে থাকেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত খালেদ মাসুদ, শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আরাফাত রায়হানসহ অন্যান্য ১০-১২ জন ছাত্রলীগ কর্মী।

ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিককে উদ্ধার করে গুরুতর প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল নিয়ে আসা হলেও অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন তাকে।

মারধরকারীদের প্রত্যেকেই শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিএফসির অনুসারী বলে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক দৌস্ত মোহাম্মদ বলেন, সন্ধ্যায় স্টেশনে চা খেতে গিয়েছিলাম। ছাত্রলীগের খালেদসহ বেশ কয়েকজন বসে ছিলো সেখানে। একটি চেয়ার খালি থাকায় আমি সেটা নিয়ে আসার সময় খালেদ আমাকে বললো- ‘তুমি এটা কার অনুমতি নিয়ে নিচ্ছ?’ আমি খালেদকে আগে থেকে চিনতাম, ও আমাদের জুনিয়র।

তাই বললাম ‘তুমি করে বলছো কেন? আমাকে চিনো?’ এরপর সে আমার সেশন জিজ্ঞেস করে। সেশন বলার সঙ্গে সঙ্গে তার হাতে থাকা গরম চা’সহ চায়ের কাপ আমার মাথায় মেরে দেয়।

তিনি আরও বলেন, এসময় আমি সাংবাদিক পরিচয় দিলে সে বলে ‘তুই সাংবাদিক হইছোস তো কি হইছে?’ এ কথা বলেই তার সঙ্গে থাকা ১০-১২ জন আমাকে বেধড়ক পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে তারা চায়ের কাপ দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করতে থাকে এবং পেটে লাথি মারতে শুরু করে। এর মধ্যে আরাফাত রায়হান বেশি মারধর করেছে। বাকিদেরও চিনি। তবে সবার নাম এখন মনে করতে পারছি না। আমার কিডনিতে আগে থেকেই সমস্যা আছে। পেটে আঘাত পাওয়ায় পেট ফুলে যাচ্ছে, খুব অসুস্থ বোধ করছি। আমি চাই এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হোক।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।