চবিতে ৫০ শিক্ষার্থীর রেজাল্ট গরমিলের অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের ৭ দাবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইংরেজি বিভাগের ৫০ শিক্ষার্থীর রেজাল্ট গরমিলের অভিযোগ উঠেছে বিভাগটির পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান যাকীয়াহ তাসনীমের বিরেুদ্ধে। আর এসব ঘটনার সঠিক সমাধানের দাবি জানিবয়েছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) ২য় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ ভবনের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে ৭ দফা দাবি জানান তারা। এর আগে, তারা বিভাগের সভাপতি বরাবর বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে একটি চিঠি দেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ১৮ আগস্ট প্রকাশিত মাস্টার্সের অফিসিয়াল রেজাল্টে ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে ফেইল দেখানো হয়। এছাড়া ১৭ জন ফাস্ট ক্লাস বাকি সকলের রেজাল্ট সেকেন্ড ক্লাস দেখানো হয়। ফলাফল আরও ভালো হওয়ার কথা ছিল বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তীরে কারণে এই রেজাল্টের বিপর্যয় হয়েছে। তারা বলেন, এই ফলাফর গত ৫ বছরে আমাদের ডিপার্টমেন্টের রেজাল্টের সাথে কোন পরিসংখ্যানে মিলে না। আমাদের ডিপার্টমেন্টের স্যার-ম্যাডামরা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেন, ওখানে ৩.৫০ থেকে ৩.৮০ পর্যন্ত রেজাল্ট নিয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করে।

তারা আরও বলেন, দেশের সকল পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের রেজাল্ট হয় ৪.০০, ৩.৫০, ৩.৮০ বা নূন্যতম ৩ নিয়ে পড়ালেখা শেষ করে। শুধুমাত্র আমরা চবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা সেশন জ্যাম ও এমন রেজাল্ট নিয়ে বাংলাদেশের স্বনামধন্য কোন প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে ব্যাংকের ফরমও সংগ্রহ করার যোগ্যতা রাখেনা। তাহলে আমরা কি এটাই ধরে নিব যে, শুধু আমরা ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরাই মেধাহীন? আমরা এ হয়রানি থেকে মুক্তি চাই।

এসব বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহ এ নূর কুদসী ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এদিন দুপুরে ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান, ২ জন ডিন ও শিক্ষকগণ মিটিংয়ে বসেন। মিটিং শেষে শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। আগের পরিক্ষা কমিটি বাতিল করে নতুন করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়াও অফিস সহায়ক আবু মঞ্জুর চৌধুরীর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের হয়রানির অভিযোগে তাকে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

৭ দফা দাবি

বর্তমান পরীক্ষা কমিটি বাতিল করে নতুন পরীক্ষা কমিটির মাধ্যমে মাস্টার্সের রেজাল্ট পূনর্মূল্যায়ন করা এবং ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে রেজাল্ট মেনিপুলেশনের অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা; অপ্রত্যাশিত কিংবা ব্যক্তিগত আক্রোশে অকৃতকার্যের বিষয়টি অধিক গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় এসে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাথে সামঞ্জস্য রেখে খাতা মূল্যায়ন করা;

বিভাগকে সেশনজট মুক্ত করা এবং কিভাবে সেশনজট মুক্ত করা হবে তার একটা রোডম্যাপ বা প্ল্যান বর্তমান চেয়ারম্যান কর্তৃক সবার সামনে উপস্থাপন করা; প্রতি ব্যাচের পরীক্ষা শেষে দুই মাসের মধ্যে রেজাল্ট পাবলিশ করা এবং পরবর্তী ব্যাচের ক্লাস ১৫ দিনের মধ্যে শুরু করা;

শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং হয়রানি করার অভিযোগে অফিস সহায়ক আবু মঞ্জুর চৌধুরীকে ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রত্যাহার করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক নিয়মবহির্ভূতভাবে কোনো জরিমানা কিংবা অন্য টাকা (যেটা চেয়ারম্যান ফান্ড হিসেবে পরিচিত) আদায় করা যাবেনা; থিসিস যারা নিয়েছে তাদের সবার রেজাল্ট রেগুলার ব্যাচের সাথে পাবলিশ করা।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।