চবির ক্রিমিনোলোজি বিভাগের নাটকীয়তার অবসান, নতুন সভাপতি সাখাওয়াত

অবশেষে নানা নাটকীয়তা শেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সভাপতি পদে এসেছে পরিবর্তন। নতুন সভাপতি হয়েছেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন।

বুধবার (১৮ মে) বেলা সাড়ে ১০টায় বিদায়ী সভাপতি সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. বি. এম নাজমুল ইসলাম খান তাঁর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
আগামী তিন বছর এই পদে দায়িত্ব পালন করবেন সাখাওয়াত হোসেন।

দায়িত্ব গ্রহণের পর অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘দায়িত্ব পালন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জ ও রোমাঞ্চকরও বটে। চ্যালেঞ্জ এই কারণে যে শিক্ষা ও গবেষণায় বিভাগে গতিশীলতা আনায়নে প্রচুর পরিশ্রম ও সতর্ক থাকতে হবে। ওয়ার্কশপ, সেমিনার, পাবলিক স্পিকিং আয়োজনের পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে পরিকল্পিত কৌশলের বিকল্প নেই। রোমাঞ্চকর এ অর্থে যে বিভাগের অগ্রগতির স্বার্থে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করার জন্য নতুন নতুন অভিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ সৃষ্টি হবে’।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে অন্য বিভাগের শিক্ষককে সভাপতি পদে রাখার অভিযোগ করেন বিভাগের তিন শিক্ষক। তাঁদের অভিযোগ যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ওই বিভাগের শিক্ষকদের পাশ কাটিয়ে প্রশাসন অন্য বিভাগের শিক্ষককে সভাপতির পদে রেখেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বিভাগের সভাপতি পদে দায়িত্ব নিতে ন্যূনতম সহকারী অধ্যাপক পদমর্যাদার শিক্ষক থাকতে হবে বলে জানা যায়। এ নিয়ে ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সভাপতি পদ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়।

এর পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিভাগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি নাজমুল ইসলাম খানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে নাজমুল ইসলাম খান কোন আইনে এ পদে আছেন, তা জানতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শাতে বলেন হাইকোর্ট।

অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেন ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগে ২০১৮ সালে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান। মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ হতে ২০১২ সালে স্নাতক এবং ২০১৪ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পূর্বে তিনি পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন।

এছাড়া তিনি বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ও দেশীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানে গবেষক হিসেবে কাজ করেছেন। শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে তাঁর প্রকাশিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের গবেষণা আর্টিকেলের সংখ্যা ১২টি। গবেষণার বিষয়বস্তু সন্ত্রাসবাদ, রাজনৈতিক অপরাধ, অপরাধ তদন্ত, পুলিশিং ও মানবাধিকার সম্পর্কিত। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দুইটি, তিনি সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কলাম লিখছেন জাতীয় দৈনিক জনকন্ঠে, এছাড়া বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় লিখছেন। তিনি দেশী বিদেশী আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।