চবি ছাত্রলীগের সংঘর্ষ— হল তল্লাশি করে দেশীয় অস্ত্রের সাথে মিলল বোতলও

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিষ্ফোরণের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বড় সংঘর্ষের আশঙ্কায় পুলিশ নিয়ে শাহ আমানত হল ও সোহরাওয়ার্দী হলে অভিযান চালায়।

বুধবার (৯ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টা থেকে অভিযান পরিচালনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। আড়াই ঘন্টাব্যাপী এ অভিযানে রামদা, কিরিচ, গুলতি, কাঁচের বোতল ও রডসহ বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

এর আগে পূর্ব ঘটনার জেরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ বিজয় ও সিএফসির মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

সন্ধ্যা সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রব হলের ঝুপড়িতে বিজয়ের এক কর্মীকে মারধরের জেরে প্রথম দফা সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে সোহরাওয়ার্দী হল ও শাহ আমানত হলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও রাত সোয়া নয়টার সময় শুরু হয় ২য় দফা সংঘর্ষ। এসময় বেশকয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় হতাহতের ব্যাপারে তৎক্ষণিক সঠিক তথ্য পাওয়া সম্ভব হয় নি।

জানা গেছে, মাহমুদুল হাসান রুপক নামে বিজয় গ্রুপের সিনিয়র এক কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের রব হলের ঝুপড়িতে নাস্তা করতে গেলে সেখানে থাকা সিএফসি কর্মীরা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় সিএফসি কর্মীরা শাহ আমানত হল এবং বিজয় কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী হল মোড়ে অবস্থান নেয়। এসময় উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ এবং প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরবর্তীতে শহর থেকে ছেড়ে আসা রাত সাড়ে আটটার শাটল রাত সোয়া নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে এসে পৌছালে সেখানে অনিক হোসাইন রিফাত নামে এক সিএফসি কর্মীকে মারধর করে বিজয় কর্মীরা। এ ঘটনার জেরে দুই হলের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির হস্তক্ষেপে উভয় গ্রুপকে নিজ নিজ হলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস ও বিজয় গ্রুপের নেতা বলেন, সিএফসির নেতা বিতর্কিত সভাপতি রুবেল পূর্ণাঙ্গ কমিটি না দেয়ার জন্য শুরু থেকেই পায়তারা করতেছে। সে ইচ্ছে করেই বারবার ক্যাম্পাসে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। সে অর্থনীতি বিভাগের কনসার্টেও আমার কর্মীদের উপর হামলা চালায়। আজকেও তার নেতৃত্বে রব হলের ঝুপড়িতে আমাদের সিনিয়র কর্মীকে মারধর করেছে।

অপরদিকে নিজেকে সিএফসি গ্রুপের নেতা নয় বলে দাবি করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল। তিনি বলেন, আমি ছাত্রলীগের সভাপতি। কোনো বগিভিত্তিক গ্রুপের নেতা নই। বগিভিত্তিক গ্রুপের অপকর্মের দায়ভার ছাত্রলীগে নিবে না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। পুলিশের সহায়তায় আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি।

তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা দুটি হলে তল্লাশি চালাই। তল্লাশীতে পুলিশ আমাদের সহায়তা করেছে। এসময় আমরা দুই হল থেকে রামদা, কিরিচ, গুলতি, কাচের বোতল ও রডসহ বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
চবি ছাত্রলীগের দু’গ্রুপ মুখোমুখি, ক্যাম্পাসে উত্তেজনা

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।