চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী দিব্য ভট্টাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৭ এপ্রিল) দুপুর বারোটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধন শেষে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি বরাবর হামলায় জড়িতদের শাস্তি ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে তারা।
মানববন্ধনে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।
এসময় বক্তারা বলেন, আমরা দূর দুরান্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে এসেছি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থীদের উপর যেভাবে অতর্কিত হামলা হল এতে করে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন। একটা সন্তান যেমন একজন মায়ের কোলকে নিরাপদ আশ্রয় মনে করি ঠিক তেমনিভাবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে মায়ের কোলের মতো নিরাপদ মনে করি। কিন্তু এখন ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা চরমভাবে বিগ্ন হয়েছে। মায়ের কোলের উপরেই একজন সন্তান তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, আমরা এই গরমে রোজা রেখে মানববন্ধনে আসতে বাধ্য হয়েছি বলা চলে। কারণ আমরা নিরাপত্তা চাই। আমরা চাই না কোনোভাবেই যেন ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা হয়। আমাদের নিরাপদ ক্যাম্পাস বিধানের দায়িত্ব কিন্তু প্রশাসনের। সর্বোপরি আমরা আজকের মানববন্ধন থেকে প্রশাসনের নিকট নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানাচ্ছি।
মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন হামলার শিকার ভুক্তভোগী দিব্য ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আমি সেদিন ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক আয়োজিত ইফতার মাহফিলে আসতেছিলাম। ওইদিন ক্যাম্পাসে কী হয়েছে না হয়েছে আমি কিছুই জানি না। রফিক ছাত্রাবাসের ওই জায়গায় আসার পর কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাকে রিকশা থেকে নামিয়ে অতর্কিত হামলা করে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা। ওরা বেশ কয়েকজন মিলে আমাকে বাঁশ, লাঠি রড ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে আমি শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত পাই। আমার সিটি স্কেন করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে স্থানীয়রা শিক্ষার্থীদের মারতেছে৷ কালকে শিক্ষকদের মারবে না কী বিশ্বাস? তাই প্রশাসনের উচিত দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেল ক্রসিং এলাকায় বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঠিকমতো না দেখে সিএনজি ঘুরানোকে কেন্দ্র করে আরফাত রায়হান নামে এক শিক্ষার্থীর সাথে সিএনজিওয়ালার তর্কাতর্কি হয়। এর এক পর্যায়ে স্থানীয় এক দোকানদারসহ বেশ কয়েকজন লোক জড়ো হয়ে আরফাতকে মারধর করে৷ এ ঘটনার পর স্থানীয় লোকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দেখলেই এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। এসব হামলায় অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।
এমএফ
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।