চসিকের ২১৬১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ২ হাজার ১৬১ কোটি ২৭ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৩০২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা কম।

আজ রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের থিয়েটার ইনস্টিটিউটে এ বাজেট ঘোষণা করেন সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এ সময় সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাজেট বক্তৃতায় মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জলাবদ্ধতা ও জলমগ্নতা চট্টগ্রাম শহরের অন্যতম সমস্যা। নগরের প্রকৃতি বিপর্যয়ের প্রধান কারণ হলো অবৈধভাবে পাহাড় কাটা এবং খাল, নালা-নর্দমায় বর্জ্য ফেলা। লক্ষ করা যাচ্ছে, কর্ণফুলী নদী যেভাবে ভরাট হয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। কর্ণফুলী বাঁচলেই চট্টগ্রাম বাঁচবে, চট্টগ্রাম বাঁচলেই দেশ বাঁচবে। চট্টগ্রাম বন্দর হচ্ছে দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড।

কর্ণফুলীকে বাঁচাতে হলে নগরকে পলিথিনমুক্ত রাখাসহ সব আবর্জনা পরিষ্কারে নগরবাসীকে নাগরিক দায়িত্ব পালনে সচেতন হতে হবে। নাগরিকদের মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সচেতনতা না এলে এ নগরকে শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে কখনো জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকে মুক্ত করা যাবে না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন মেয়র।

বাজেট বক্তৃতায় মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের বসবাস। এখানে অনেক সেবা সংস্থা রয়েছে, যারা নগরবাসীকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। তার মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সবচেয়ে বড় ও নগরের অভিভাবক প্রতিষ্ঠান। সব সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান নিশ্চিত করতে হবে।

মেয়র বলেন, সমস্যা আছে এবং থাকবেই। মেধা, দক্ষতা, সৃজনশীলতার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। নগরবাসীর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে মেয়র-কাউন্সিলর নির্বাচিত করেছেন, তাঁদের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিদান দিতে হবে। অতীত নিয়ে কিছু বলতে চাই না, যা আছে তা নিয়েই ভবিষ্যৎ পানে এগিয়ে যেতে হবে। পরিচ্ছন্ন, সবুজ, বাসযোগ্য ও নান্দনিক চট্টগ্রাম নগর গড়তে গত এক বছরে অনেকগুলো প্রকল্পের বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান মেয়র।

এবাবের বাজেট অধিবেশনে ২০২১-২২ অর্থবছরের ১ হাজার ২০২ কোটি ৫৭ লাখ টাকার বাজেট উপস্থাপন করা হয়। এ অর্থবছরের মূল বাজেট ছিল ২ হাজার ৪৬৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার। অর্থাৎ বাজেট বাস্তবায়নের হার অর্ধেকের কম—প্রায় ৪৯ শতাংশ।

এবারের বাজেটে আয়ের মূল খাত ধরা হয়েছে উন্নয়ন অনুদান। এ খাতে সরকার ও দাতা সংস্থার কাছ থেকে ১ হাজার ২১২ কোটি টাকা পাওয়ার প্রত্যাশা করছে করপোরেশন। আগের অর্থবছরে ১ হাজার ৫৭০ কোটি টাকার বিপরীতে পেয়েছিল ৬৮৯ কোটি টাকা।

এ ছাড়া নিজস্ব উৎস থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯০৪ কোটি টাকা। যদিও শেষ হতে যাওয়া অর্থবছরে ৮৫২ কোটি টাকার মধ্যে শেষ পর্যন্ত আয় করে ৪২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

নিজস্ব উৎসের মধ্যে গৃহকর খাতে আয়ের প্রত্যাশা ধরা হয়েছে ৪২৭ কোটি টাকা। অন্যান্য কর ও ফি খাতে আদায় করবে ২৮২ কোটি টাকা। বিভিন্ন ভবন, হাটবাজার, বিপণিবিতান থেকে ভাড়া আদায় হবে ১১১ কোটি টাকা।

এ দিকে ব্যয় খাতের মধ্যে বেতনভাতা, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে খরচ হবে ৫৬৫ কোটি টাকা। উন্নয়ন খাতে ব্যয় হবে ১ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা। আগের বকেয়া পরিশোধের জন্য রাখা হয়েছে ১৭৬ কোটি টাকা।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।