চাকসু নির্বাচনে লড়ছেন মিরসরাইয়ের ৪ সন্তান

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে লড়ছেন মিরসরাইয়ের চার তরুণ। তাঁরা হলেন পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদে আবদুল ওয়াজেদ চৌধুরী, সহ-যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক পদে তানজিম হাসান, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে আফনান হাসান ইমরান এবং সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে আসিফ হোসেন। ভিন্ন ভিন্ন পদে প্রার্থী হলেও চারজনের লক্ষ্য এক— শিক্ষার্থীদের কল্যাণ ও একটি উন্নত ক্যাম্পাস গঠন।

১৪ নম্বর হাইতকান্দির সন্তান আবদুল ওয়াজেদ চৌধুরী ফাইন্যান্স বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী এবং পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদে ব্যালট নম্বর ০১ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কেবল ক্লাসরুমে সীমাবদ্ধ নয়, বরং পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়াও তাদের দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সমৃদ্ধ পাঠাগার আমাদের জ্ঞানের ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করবে, আর স্বাস্থ্যকর ও সুলভ ক্যাফেটেরিয়া আমাদের শক্তি জোগাবে।” তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত হলে জ্ঞানচর্চার পরিবেশ উন্নয়ন, নতুন বই সংযোজন এবং ক্যাম্পাসে মানসম্মত খাদ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাই হবে তাঁর মূল লক্ষ্য।

মিরসরাই পৌরসভার বাসিন্দা আফনান হাসান ইমরান হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোটের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে ব্যালট নম্বর ০১ নিয়ে লড়ছেন। আফনান বলেন, “মেডিক্যাল সেন্টারের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাই আমার প্রথম লক্ষ্য। এটিকে আধুনিক করে ৩০ শয্যার হাসপাতাল গড়ে তোলার চেষ্টা করব।” তিনি আরও জানান, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র দুটি অ্যাম্বুলেন্স থাকায় অনেক সময় জরুরি সেবায় বিলম্ব হয়। তাই অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বাড়ানো এবং ছাত্রী হলের সামনে ফার্মেসি স্থাপন তাঁর অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে।

১০ নম্বর মিঠানালার বাসিন্দা তানজিম হাসান সহ-যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক পদে লড়ছেন। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগব্যবস্থা ও হলের আবাসন পরিবেশ শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রায় সরাসরি প্রভাব ফেলে। তাই আমি এমন উদ্যোগ নিতে চাই যেখানে প্রতিটি শিক্ষার্থী সহজে চলাচল করতে পারবে এবং আবাসিক হলে স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।” তাঁর প্রতিশ্রুতি, শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসন, রুম বণ্টনে স্বচ্ছতা ও পরিবেশবান্ধব পরিবহনব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

অন্যদিকে ১১ নম্বর মঘাদিয়ার আসিফ হোসেন সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় শুধু পড়াশোনার জায়গা নয়, এটি আমাদের দ্বিতীয় বাড়ি। এখানে পরিবেশ রক্ষা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সামাজিক সংহতি নিশ্চিত করা প্রতিটি শিক্ষার্থীর দায়িত্ব।” আসিফের প্রতিশ্রুতি, একটি সবুজ ও সচেতন ক্যাম্পাস গড়ে তোলা, যেখানে শিক্ষার্থীরা সামাজিক দায়িত্ববোধ ও পরিবেশ সচেতনতার চর্চা করবে।

একই উপজেলার চার তরুণ একসঙ্গে চাকসুর ভিন্ন ভিন্ন পদে লড়ছেন— এটি মিরসরাইবাসীর জন্য গর্বের বিষয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় শিক্ষাবিদ ও সাবেক ছাত্রনেতারা মনে করছেন, তরুণ প্রজন্মের এই অংশগ্রহণ ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব বিকাশে অনুপ্রেরণা যোগাবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন চাকসু নির্বাচন ঘিরে এখন উত্তেজনা ও উৎসবের আবহ বিরাজ করছে।

প্রার্থীরা নিজেদের প্রচারণা জোরদার করেছেন, পোস্টার-ব্যানারে মুখর ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে জমে উঠেছে আলোচনা।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।