চায়না ইকোনমিক জোনে ভূমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

চট্টগ্রামের চায়না ইকোনমিক জোনের আনোয়ারা অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণে অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণের টাকা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখা থেকে ৮ ভাইবোনের প্রায় দেড় কোটি টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগে আবু ছৈয়দ (৫০) নামে আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন একই পরিবারের তিন ভাইবোন।

চট্টগ্রাম চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আবু ছৈয়দ (৫০) বিরুদ্ধে মামলাটি করেন তার বড়বোন রাবিয়া খাতুন (৭৫), সাবিয়া খাতুন (৭১) ও বড়ভাই আবুল কালাম (৬৫)। গত ২৩ জুলাই আদালত তিনটি মামলা আমলে নিয়ে আনোয়ারা থানা পুলিশকে তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী এসএম নাজমুল আলম।

মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্ত আবু ছৈয়দ (৫০) অরেজিস্ট্রিকৃত আমমোক্তার নামাসহ কাগজপত্র তৈরি করে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের মুহাম্মদপুর এলাকার মৃত জান বক্স মালিকানাধীন জমির ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রতারণার মাধ্যমে গত ২০১৬ সালের ১৫ জুন অরেজিস্ট্রিকৃত আমমোক্তার নামা সৃজন করে ৪ ডিসেম্বর ৭টি চেকের মাধ্যমে ৯১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯৫ টাকা, ২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারি ৫টি চেকের মাধ্যমে ৪৯ লাখ ৯৮ হাজার ৩২ টাকা এবং ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই ১০ লাখ ৯০ হাজার ২৩২ টাকা তুলে নেন। তাদের মধ্যে মৃত জান বক্সের পুত্র আবুল কাসেম (৭৪), আবুল কালাম (৬৫), আবুল বশর (৫৫), কন্যা রাবিয়া খাতুন (৭৫), সাবিয়া খাতুন (৭১), মঞ্জুরা খাতুন (৭৩), মাসুদা খাতুন (৬৩) ও ছমুদা খাতুনের (৫৬) অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি বলেও উল্লেখ করেন।

মামলার বাদী রাবিয়া খাতুন (৭৫), সাবিয়া খাতুন (৭১) ও আবুল কালাম (৬৫) বলেন, ‘আমাদের আপন ছোটভাই আবু ছৈয়দ (৫০) চায়না ইকোনমিক জোনের আনোয়ারা অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণে অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণের টাকার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখা থেকে চেক নেওয়ার কথা বলে অরেজিস্ট্রিকৃত আমমোক্তার নামাসহ কাগজপত্র তৈরি করে ২০১৬ সাল থেকে শুরু আজ পর্যন্ত সব টাকা তুলে নেন। একেরপর এক সব টাকা বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে তুলে নিলেও আমাদের এক টাকাও দেয়নি। আমরা টাকা চাইতে গেলে সে আমাদের মারধর করে এবং হত্যার হুমকিও দেয়। আমাদের টাকা উদ্ধারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও ভূমিমন্ত্রীসহ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।’

জানতে চাইলে আবু ছৈয়দ (৫০) বলেন, ‘আমরা ভাইবোন ৯ জনের মধ্যে ৮ জন সবাইকে টাকা উত্তোলনের ৫দিনের মধ্যে টাকা দিয়ে ফেলছি। তারা যে টাকা বুঝে পেয়েছে এসব ডুকুমেন্টসও আমার কাছে রয়েছে। টাকা নেওয়ার পর এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করছে।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী এসএম নাজমুল আলম বলেন, ‘প্রতারণার মাধ্যমে ভূমির ক্ষতিপূরণের অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে এ মামলা করা হয়েছে আবু ছৈয়দের বিরুদ্ধে। আসামির বিরুদ্ধে আদালতে একই পরিবারের আরও দুই সদস্য মামলা করেছে। আমরা এসব বিষয় আদালতকে জানিয়েছি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশকে তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।