চালের দাম নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অবিলম্বে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি তোলা হয়েছে চট্টগ্রামের এক কর্মসূচি থেকে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে ‘ভাতের পাতে স্বস্তি ফেরাও’ স্লোগানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাবসহ চারটি সংগঠন।

‘চালের মূল্য বৃদ্ধি, নিত্যপণ্যের বাজারে কারসাজি ও কৃত্রিম সংকট বন্ধের দাবিতে’ এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। সমাবেশে চালের ক্রমাগত অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তায় ঝুঁকি বাড়ার কারণে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেন বক্তারা।

ক্যাব এর কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, চালের কোন সংকট নেই। পর্যাপ্ত মজুদ আছে। এটা হলো সিন্ডিকেটের কারসাজি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বলে এসেছি। কিন্তু সিন্ডিকেট ভাঙতে পারিনি। তখন সরকারের আন্তরিকতা ছিল না, সরকার সিন্ডিকেট ভাঙেনি।

তিনি বলেন, এখন পর্যাপ্ত চালের মজুদ আছে। আমদানিও প্রচুর আছে। তারপরেও চালের দাম, তারা কিন্তু প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে যাচ্ছে। চালের বাজার কোনো সময় তদারকির মধ্যে থাকে না। যখনই এরকম দাম বাড়ে খুচরা কয়েকটা দোকানে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসন গিয়ে একটু করে জরিমানা করে। তারপরে শেষ।

তিনি আরও বলেন, যারা আসলে মূল হোতা পাইকার, আড়তদার, মজুতদার, মিলার ও করপোরেট গ্রুপ, তাদের ব্যাপারে কোনো সময় খোঁজ খবর নেওয়া হয় না। এ কারণে তারা প্রতিনিয়ত দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে।

“যেহেতু এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, তাদের কাছে মানুষের প্রধান দাবি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ভাতের যোগান নিশ্চিত করা। তাই অধিক গুরুত্বসহকারে বিষয়টা বিবেচনা করে চালের মূল্যের সংকটের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি) এর সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম মাসুদ বলেন, আয় ও ক্রয়ক্ষমতার ভারসাম্য না থাকায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ তাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকা থেকে পুষ্টিকর উপাদান যেমন মাছ, মাংস, ডাল বা সবজি বাদ দিয়ে শুধু ভাত-নির্ভর খাবার খাচ্ছেন।

তিনি বলেন, যা দীর্ঘমেয়াদে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্যহীনতা মানুষের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

যুব ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন-জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু, বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব জিয়া হাবিব আহসান, বাংলাদেশ ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেলস এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর, চট্টগ্রাম মহানগর শাখা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সহ-সভাপতি ফারহানা আখতার, বিএনপি নেতা ফরিদা খানম, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস।

আয়োজক সংগঠনগুলোর মধ্যে খানি, ক্যাব, যুব ক্যাব ছাড়াও ছিল আইএসডিই বাংলাদেশ।