চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ—চিকিৎসা সেবা প্রার্থীদের ভোগান্তি চরমে

শরীরে জ্বর নিয়ে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে গেলেন একজন গণমাধ্যম কর্মী। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়ার শনাক্তে রক্ত পরীক্ষা দিলেন। তিনি সম্প্রতি পাহাড়ী জনপদ ভ্রমণ করেছেন। জ্বর হওয়াতে স্বাভাবিকভাবে সন্দেহ হচ্ছে ম্যালেরিয়া কিংবা ডেঙ্গু।

যথারীতি নার্স এসে রক্ত সংগ্রহ করেছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ডেঙ্গু নেগেটিভ জানালেও তারা জানাতে পারেননি ম্যালেরিয়া কিনা। কারণ ম্যালেরিয়ার রিপোর্ট যে চিকিৎসক করেন তিনি ধর্মঘটের কারণে চেম্বার করছেন না। ডেঙ্গুর রিপোর্ট জরুরী হওয়ায় চিকিৎসক সেটি করে দিয়েছেন। আন্দোলনের সময় সীমা যদি না বাড়ে তবে ম্যালেরিয়ার রিপোর্ট পাওয়া যাবে আগামীকাল।

শহরের ওই গণমাধ্যম কর্মীর মতো হাজারো নাগরিক ভোগান্তিতে আছেন। তবে আশপাশের জেলা কিংবা দূর-দূরান্তের উপজেলা থেকে প্রাইভেট চেম্বারে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের অবস্থা আরও নাজুক।
ফেনী থেকে আব্দুল হালীম নামের ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধকে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের এক ক্লিনিকে চিকিৎসককে দেখাতে এসেছেন তার স্বজনরা। চেম্বার বন্ধ হওয়ায় তারা ফিরে যাচ্ছেন ফেনী।

রোগীর স্বজন ইকবাল হোসেন বলেন, ঢাকা-ফেনী একাধিকবার নাম করা চিকিৎসক দেখিয়ে রোগ নির্ণয় হয়েছে। আমরা জরুরী ভিত্তিতে মুরুব্বীর চিকিৎসা শুরু করতে আরেক নাম করা চিকিৎসকের সিরিয়াল নিয়ে আসছি। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে তা হয়ে উঠছে না। আগামী বুধবার আমরা আবার আসবো।

তবে সরকারী হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ। চিকিৎসকরা সেই চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন। সরেজমিনে চমেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় অন্য দিনের তুলনা আউট-ডোরে প্রচুর রোগী। চিকিৎসকরা প্রাইভেট চেম্বারে টাকা নিয়ে রোগী দেখলেও হাসপাতালে আউট ডোরের টিকিটেই রোগী দেখছেন।

চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর স্বজন ফাতেম বেগম বলেন—স্যারকে (চিকিৎসককে) চেম্বারে দেখাতে ফি নেন ৭০০ টাকা। এখানে ১৫ টাকার টিকিটে তিনি আমার মেয়েকে দেখে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এবং স্ত্রী ও প্রসূতিরোগ চিকিৎসকদের সংগঠন ওজিএসবি (অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অফ বাংলাদেশ) সোমবার ও মঙ্গলবার চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রাখার কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।