চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় একটি সেতুর গোড়া থেকে মাটি সরে গিয়ে ধসে পড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে সেতুটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে কোনোমতে ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে পার হচ্ছেন স্থানীয়রা। এই ঘটনা ঘটে উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের মুন্সেফ বাজারের দক্ষিণে শমসু হাজি পাড়াস্থ রাতারছড়ার ওপর নির্মিত সোনাছড়ি সেতুতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিচে পিলারের গোড়া থেকে মাটি সরে গিয়ে সেতুর সংযোগ সড়কের দুইপাশের বেশ কিছু অংশ ধসে পড়েছে। মাঝখানে সামান্য অক্ষত রয়েছে। সেটিও যেকোনো সময় পানির স্রোতে মিশে যাবে। বর্তমানে সেতুটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে কোনোমতে ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে পার হচ্ছেন স্থানীয়রা।
এটি দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন রোসাইঙ্গা ঘোনা, বড়ুয়া পাড়া এবং শমশু হাজি পাড়ার বাসিন্দারা। তবে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সমস্যাটি সবচেয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য। এ সড়কটি আসাযাওয়া করে সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী। এরমধ্যে চুনতি হাকিমিয়া কামিল মাদ্রাসা, চুনতি সরকারি মহিলা কলেজ, চুনতি উচ্চ বিদ্যালয়, ফাতেমা বতুল মহিলা মাদ্রাসা, হাকিমিয়া সরকারি প্রাথমিক স্কুল, মেহেরুন্নিছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং আনসার ভিডিপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দ সিদ্দিকী বলেন, ১৯৯৯ সালে নির্মাণ করা হয় সেতুটি। কিন্তু সেতুর আশেপাশে দীর্ঘদিন ধরে থেমে থেমে হাত দিয়ে তাবার (যন্ত্র) সাহায্যে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি চক্র। ফলস্বরুপ ধীরে ধীরে সেতুর গোড়া থেকে মাটি সরতে শুরু করে। একপর্যায়ে সাম্প্রতিক সময়ে ভারি বর্ষনে ছড়ার পানি বৃদ্ধি পেয়ে তীব্র স্রোতে সেতুটি ধসে পড়েছে।
আরেক বাসিন্দা খোকন বলেন, আমাদের এলাকার কিছু অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের কারণে আজ এই পরিণতি। যতদিন পর্যন্ত বালু উত্তোলন করা বন্ধ হবে না ততদিন পর্যন্ত এই পরিণতি মেনে নিতে হবে। দ্রুত এই বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থার গ্রহণ প্রয়োজন।
কৃষক আবদুল মন্নান বলেন, বালু উত্তোলনের ফলেই সেতুটি ধ্বংস হয়েছে। সেতুটি বর্তমানে পাঁচফুট নিচে দেবে গেছে। বালু উত্তোলন কিছুতেই থামছে না। একেক সময় একেকজন এ কাজে জড়িত।
এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা স্কুলে যাওয়ার সহজ ও একমাত্র পথে সেতুটির অবস্থান। কিন্তু কিছুদিন আগে সেতুটি ধসে পড়ার কারণে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে অক্ষত অংশটি পুরোপুরি ভেঙে খালের পানির স্রোতে মিশে যাবে। আমরা সেতুটি পূণরায় নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইফরাদ বিন মুনীর বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুতসময়ের মধ্যে কাজটি হয়ে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ ইনামুল হাছান বলেন, জনদুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে সেতুটি সংস্কার করা হবে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।